রাউজানে রাতের আঁধারে দরজা বন্ধ করে আগুন দিয়ে ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা

শফিউল আলম, রাউজানঃ রাউজানে গভীররাতে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে ঘরে আগুন লাগিয়ে নাশকতার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি মাসে রাউজান উপজেলায় দুই স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এতে বড় ধরণের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এদিকে নাশকতার চেষ্টায় পুলিশ কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে না পারায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর (শনিবার) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সমীর মাস্টারের বাড়িতে তিনটি সনাতন পরিবারে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এখানেও বাহির থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুবৃর্ত্তরা। এতে তিনটি পরিবারের ঘরের আংশিক অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এঘটনায় ১৬ নভেম্বর (রবিবার) সকালে ভুক্তভোগী শংকর শীল রাউজান থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গভীর রাতে আমার বসতঘর, আমার ভাই রবি শীল ও পার্শ্ববর্তী মানিক শীলের বসতঘরে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন দিয়ে নাশকতার চেষ্টা করে হয়েছে। এতে আমাদের ঘরের আংশিক অংশ পুড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে দেখতে পাই পার্শ্ববর্তী ঘর বাসু চৌধুরীর ঘরেও নাশকতার উদ্দেশ্যে কেরোসিন ঢালা হয়। অগ্নিকাণ্ডে মানিক শীল ও রবি শীলের বিদ্যুৎতের ক্যাবল পুড়ে যায়। শংকর শীল বলেন, ‘আমরা ঘুমে ছিলাম। পার্শ্ববর্তী ঘরের মানুষের চিৎকারে জেগে উঠে দেখি আগুন জ্বলছে। দরজা বাহির থেকে বন্ধ। কাপড়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোনো শত্রু নেই। জায়গাজমি নিয়ে বিরোধও নেই। আমরা রাজনৈতিকভাবেও সম্পৃক্ত না। কারা করেছেন এমন কাজ বুঝতে পারছি না।’জানা যায়, এর আগে গত ৭ নভেম্বর রাত ৩টার দিকে রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কলমপতি এলাকায় শ্যামল দে’র ঘরে আগুন দেয়া হয়েছে। সেখানেও একই কায়দায় বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন দেয়া হয়। আগুনে তার রান্না ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সে সময় পার্শ্ববর্তী আরেকটি পরিবারে আগুন দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।এই নিয়ে সপ্তাহের ব্যবধানে আগুন লাগানোর ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দুইদিকে আগুন লাগানোর ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা শনাক্ত করতে পারেনি। স্থানীয়রা বলছেন, অপরাধীদের ধরতে না পারায় তাদের সাহস বেড়ে যাচ্ছে। তাই তারা বারবার নাশকতার চেষ্টা করে যাচ্ছে।সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যাওয়া রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক মো. হাসান আলী শেখ বলেন, ‘ধারণা করছি কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আগুন দিয়েছে। বড় ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে।’এবিষয়ে রাউজান ফায়ার সার্ভিস এণ্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন খান বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ড বা নাশকতার বিষয়ে আমাদের কেউ জানায়নি।’এবিষয়ে জানতে রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়াকে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।