ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল বন্ধ রাখার দাবি

দেশের বাকি ৩৪ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেল স্থাপন না করা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতারা। গতকাল শনিবার দুপুরে খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের বড়দারোগারহাট ও কুমিল্লার দাউদকান্দিতে স্থাপিত ওজন স্কেল প্রত্যাহার বিষয়ক আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি এবং খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেলের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে অবহিত করা হয়েছে। জানানো হয়েছে চেম্বারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অন্যান্য মন্ত্রীদেরও। সবার কাছ থেকে বারবার আমরা কেবল আশ্বাসই পেয়েছি, সমাধান কিছুই হয়নি। আমি আবারও বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মহলের সঙ্গে কথা বলব।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগির আহম্মদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫টি মহাসড়ক আছে। এই মহাসড়কগুলোর মধ্যে ওজন নিয়ন্ত্রণ আছে কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। বাকি ৩৪ মহাসড়কে ওজন স্কেল না থাকার কারণে আমরা বাণিজ্যিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে লাইটারের মাধ্যমে নৌপথে পণ্য খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও তার কিছুই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এখানে মাঝিরঘাট এবং সদরঘাটের যেসব গুদাম রয়েছে সেখানে এখন শুন্যতা তৈরি হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি- দেশের বাকি ৩৪টি মহাসড়কে যতক্ষণ পর্যন্ত ওজন স্কেল বসানো হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি লতিফ আহমদ বলেন, আমরা কখনোই ওজন স্কেলের বিপক্ষে নয়। তবে আমাদের একটাই কথা- ওজন স্কেল শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কেন হবে, এটি দেশের সকল মহাসড়কে স্থাপন করতে হবে। চট্টগ্রাম গুদাম মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, ওজন স্কেল প্রত্যাহারে সকল ব্যবসায়ী সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ
করতে হবে। তবে অনুরোধ ব্যবসা বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো কর্মসূচি যাতে দেয়া না হয়।
চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সঞ্জয় দেব খোকন বলেন, ফেনী থেকে ২০-২৫ টন পণ্য পরিবহন করা যায়। ওজন স্কেলের কারণে চট্টগ্রাম থেকে পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। চেম্বার সভাপতির মাধ্যমে ব্যাপারগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানাতে হবে।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওজন স্কেলের ব্যাপারে অনেক চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন অন্যজনকে দোষারোপ না করে সবাইকে একত্রিত হয়ে একটি সুনির্দিষ্ট জায়গায় আসতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ডাল মিল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন, দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ছালেহ আহমদ সুলেমান, ৩৪ নম্বর পাথর ঘাটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর, মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন, ব্যবসায়ী নেতা আহমদ রশীদ আমু, অনিল চন্দ্র পাল, আলমগীর পারভেজ, এসএম নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।