যে কারণে বিধ্বস্ত হয় জেনারেল বিপিন রাওয়াতের হেলিকপ্টার

ভারতে গত মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দেশটির প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতসহ ১৪ জন নিহত হন। এই দুর্ঘটনার পরই তদন্তে নেমেছিল ট্রাই সার্ভিসের তদন্তকারী দল। সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে তদন্তকারী দল তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, ঐ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে—সম্ভবত মেঘলা আবহাওয়ার কারণে একটি নিয়ন্ত্রিত ফ্লাইট ইন টেরেইন (সিএফআইটি) দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেদিন।

দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার এবং সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মানবেন্দ্র সিং উপস্হিত ছিলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে রাজনাথের সামনে নিজেদের রিপোর্ট উপস্হাপন করেন তদন্তকারীরা। তদন্ত রিপোর্টে বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। আগামী দিনে যখনই কোনো ভিআইপিকে হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হবে তখন সেগুলো মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দুর্ঘটনার ঠিক আগে জঙ্গলে ঢাকা পাহাড়ি এলাকার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। একটি রেললাইন ধরে সামনের দিকে এগোচ্ছিলেন পাইলট। সেই সময় হঠাৎই ঘন মেঘের আস্তরণের মধ্যে ঢুকে পড়ে হেলিকপ্টারটি। সেই সময় ভূমি থেকে হেলিকপ্টারটির উচ্চতা খুব বেশি ছিল না। পাইলটসহ অন্য ক্রুরা সকলেই এই এলাকার সঙ্গে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাদের মনে হয়, মেঘের চাদর ভেদ করে কোথাও হেলিকপ্টার ‘ল্যান্ড’ না করে আরো উপরে উঠে যাওয়াই নিরাপদ হবে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। উপরে ওঠার সময়ে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ে হেলিকপ্টারটি।

তদন্তকারীদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি চালানোর দায়িত্বে থাকা পাইলটরা গ্রাউন্ড স্টেশনের কাছে কোনো সাহায্য চাননি। গ্রাউন্ড স্টেশনে আপদকালীন কোনো বার্তাও পাঠানো হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর তামিল নাড়ুর নীলগিরি পাহাড়ে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। ঘটনার দিনই ১৪ জন আরোহীর ১৩ জনই প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে জেনারেল বিপিন রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতও ছিলেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্হায় এয়ার ফোর্স গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংকে উদ্ধার করা হয়। পরে চিকিত্সাধীন অবস্হায় তার মৃত্যু হয়।