জাতীয় গণসংগীত উৎসব শুরু

‘সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ স্লোগানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হয়েছে চতুর্থ জাতীয় গণসংগীত উৎসব।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে একঝাঁক শিল্পীর কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ও ‘আমার এ দেশ সব মানুষের’ গান দিয়ে শুরু হয় উৎসব।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, গণসংগীত বিশ্বের শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম।
গণসংগীত মানুষকে জাগায়। অগ্নিবীণার গান মানুষকে জাগিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বিশ্বের কয়েকটি দেশে যখন চক্রান্ত হচ্ছিল তখন বাংলাদেশ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল।

বক্তব্য দেন উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ, সংস্কৃতিজন ও উৎসব উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও উৎসবের প্রধান সমন্বয়কারী মানজার চৌধুরী সুইট, উৎসবের যুগ্ম সমন্বয়কারী শিল্পী শ্রেয়সী রায় ও চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান।

গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতাযুদ্ধে শিল্পীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাম্প্রদায়িকতা, শোষণ, বঞ্চনা, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করে গণসংগীত। ঢাকার বাইরে প্রথম চট্টগ্রামে জাতীয় গণসংগীত উৎসব। আশাকরি অন্য বিভাগগুলোতেও এ উৎসব করতে পারব।

২৭ এপ্রিল সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সেমিনারে মূল বিষয় ‘শিল্পীর নাগরিক দায়, জীবন ও সংগ্রাম’ শীর্ষক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ। আলোচনায় অংশ নেবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও গবেষক শামসুল হক। সূচনা বক্তব্য দেবেন গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান।

২৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে চারটায় দলীয় সঙ্গীত পর্বে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গান পরিবেশন করবে যশোরের দল পুনশ্চ, শাহ আব্দুল করিমের গান পরিবেশন করবে সিলেটের অন্বেষা শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষক আন্দোলনের গান পরিবেশন করবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকা, শেখ লুৎফর রহমানের গান পরিবেশন করবে ঢাকার সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, সলিল চৌধুরীর গান পরিবেশন করবে ঢাকার বহ্নিশিখা, চাকমা ভাষার গণসঙ্গীত পরিবেশন করবে রাঙ্গামাটির গিরিসুর শিল্পীগোষ্ঠী, ভাষা আন্দোলনের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের ছন্দানন্দ সাংস্কৃতিক পরিষদ, আখতার হুসেন ও সেলিম রেজার গান পরিবেশন করবে খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরীর শিল্পীরা।

একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন সাতক্ষীরার শির্পী রোজ বাবু, পাবনার প্রলয় চাকী, সিলেটের গৌতম চক্রবর্তী, ঢাকার ফকির শাহাবুদ্দীন, সুরাইয়া পারভীন ও নবনীতা জাঈদ চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের সুজিত চক্রবর্তী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র।

২৮ এপ্রিল বিকেলে সাড়ে চারটায় দলীয় সঙ্গীত পর্বে গারো গান পরিবেশন করবে নেত্রকোনার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত গান পরিবেশন করবে চাঁদপুরের দল সপ্তসুর, মুকুন্দ দাসের গান পরিবেশন করবে মুন্সীগঞ্জের দল অন্বেষণ, মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল স্বভূমি লেখক-শিল্পী কেন্দ্র, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেশের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাষায় গণমানুষের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের স্বরলিপি সাংস্কৃতিক ফোরাম এবং অশোক সেনগুপ্তের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী।

একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ময়মনসিংহের শিল্পী দিল বাহার খান, মুন্সীগঞ্জের শিশির রহমান, ঢাকার অলক দাশগুপ্ত, চট্টগ্রামের কল্পনা লালা, জয়ন্তী লালা ও শ্রেয়সী রায়। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের প্রাপন একাডেমি।