বোয়ালখালীতে শীতেও কাটল না সাপ আতঙ্ক

বোয়ালখালী(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি: অ্যান্ড্রয়েড ফোনে চোখ রেখে রাতের ঘুম অনেকদিন আগেই মানুষের সঙ্গ ত্যাগ করেছে। তবে জীব জন্তুর সঙ্গে তেমন শত্রুতা ছিল না। শীতের দিনগুলোয় পরিশ্রম একটু কম। তাই নিজের বাসস্থানে ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিয়ে দিন কাটায় পোকা-মাকড়, সাপ-খোপ। তখন খোলা আকাশের নিচে একটু শান্তিতে চড়ুইভাতি করতে পারে মানুষ। তবে চট্টগ্রামের একটি গ্রামে শীতেও কাটল না ঘন বর্ষাদিনের আতঙ্ক। সারা গ্রামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সাপের দল। গর্ত ছেড়ে দলে দলে বেরিয়ে পড়ছে সাপেরা। শীত থেকে বাঁচতে একটু উষ্ণতা চাই ওদের। খোলা মাঠে, ধান ক্ষেতে রাস্তার ধারে গুটিসুটি মেরে পড়ে আছে বিষধর সাপ। সাপের সঙ্গে সঙ্গে তাই বাসিন্দাদের রাতের ঘুম গেছে উবে। সাপের উপদ্রব যতই বাড়ুক তবু তাকে মারার পথে হাঁটছে না এলাকার মানুষ। বোয়ালখালী উপজেলার দক্ষিণ সারোয়াতলী গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সুরেশ বলেন, গত দুই মাসে গ্রামের বেশ কয়েকজনকে সাপে কেটেছে। এতে সাপ আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের মানুষ। তিনি বলেন, গ্রামের সাথে লাগোয়া রায়খালী খাল খননের কাজ শুরু হলে এ সাপের উপদ্রব বাড়তে থাকে। ধারণা করছি খাল পাড়ের ঝাড় জঙ্গল পরিস্কার করায় সাপেরা বাসস্থান ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ সারোয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর চক্রবর্তী জানান, মাস খানেক আগে বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সূর্য্যয় শীলকে সাপে কেটে ছিলো। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সূর্য্যয়ের পিতা সুজন শীল। এর আগে সূর্য্যয়দের প্রতিবেশী গণেশ শীলের স্ত্রী শুক্লা শীলকেও সাপে কাটে। দক্ষিণ সারোয়াতলী গ্রামের বাসিন্দা মৃদুল বিশ্বাস বলেন, ‘ গত শনিবার আমার বোন মীরা আইচকে বিষধর সাপ কামড় দেয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। চমেক হাসপাতালে তিনদিন ভর্তি রাখতে হয়েছিল।’ তিনি জানান, গত দুই মাস পূর্বে একই গ্রামের বাসিন্দা সুভাষ পালকে সাপে কামড়িয়েছিল। তিনিও চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আজই এলাকায় খবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাণিবিদদের বক্তব্য, ওদের ক্ষতি না করলে ওরাও মানুষের ক্ষতি করে না। এই মুহুর্তে চাষিরা ক্ষেত থেকে আমন ধান তুলছেন। আর ক্ষেত-খামার, মাঠঘাট সর্পকূলের বাসস্থানের জন্য সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে।