করোনার নতুন রূপ ‘ওমিক্রন’, উদ্বেগজনক ঘোষণা করলো হু

করোনা ভাইরাসের নতুন ‘বি.১.১.৫২৯’ প্রজাতিকে ‘ওমিক্রন’ নাম দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এই প্রজাতিকে উদ্বেগজনক বা ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি।

নতুন এই প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞদের। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বৎসোয়ানায় টিকাপ্রাপ্তরাই করোনার নতুন এই প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন।

হু জানিয়েছে, নতুন ভেরিয়েন্টের ভাবগতিক বুঝতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে বিবৃতিতে তারা বলেছে, এই ভেরিয়েন্টে বিপজ্জনক মিউটেশন ঘটেছে। বস্তুত, সেই কারণেই চিহ্নিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকির সর্বোচ্চ ধাপে রাখা হলো করোনার এই নতুন স্ট্রেনকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল এই প্রজাতির ভাইরাস। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তাতে ৫০টি মিউটেশন (জিনগত পরিবর্তন) ইতোমধ্যেই ঘটেছে, যার মধ্যে ৩০টিরও বেশি হয়েছে শুধুমাত্র স্পাইক প্রোটিনে। নতুন এই প্রজাতির করোনা ভাইরাস যাদের আক্রমণ করেছে, তাদের শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ বা ‘ভাইরাল লোড’ খুব বেশি হয়েছে। নতুন প্রজাতিটির উৎস নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো এইচআইভি আক্রান্তের শরীরই সম্ভবত এই ভেরিয়েন্টের উৎস। অতীতে করোনার বিটা ভেরিয়েন্টও এক এইচআইভি রোগীর শরীরে প্রথম পাওয়া যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বুধবার (২৪ নভেম্বর) যত জন সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের ৯০ শতাংশের শরীরেই ওমিক্রন স্ট্রেনের ভাইরাস মিলেছে। নতুন এই প্রজাতির করোনা সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে জোহানেসবার্গে। সেখানকার সংক্রমিতদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল-কলেজের পড়ুয়া। ফলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, নতুন প্রজাতির ভাইরাসের শিকার মূলত হচ্ছেন অল্প বয়সিরা। আবার টিকার দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সুরক্ষিত, এমনটা ভাবছেন না নয়াদিল্লি এমসের সেন্টার ফর কমিউনিটি মেডিসিনের চিকিৎসক সঞ্জয় রাই। তিনি বলেন, নতুন ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে আমরা এখনও বিশেষ কিছু জানি না। অপেক্ষা করতে হবে। তবে এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে, টিকাকরণ বা সংক্রমণের ফলে শরীরে তৈরি হওয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা হয়তো এই প্রজাতিকে রুখতে পারবে না। সত্যিই যদি তা হয়, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুতর।

নতুন করোনাতঙ্ক

নভেল করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-২-এর নতুন ভেরিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ হাজির। নাম বি.১.১.৫২৯। একে নিয়ে ভয়ের অন্যতম কারণ, কোভিড টিকার কার্যকারিতা রুখে দিতে পারে নতুন স্ট্রেনটি।

ভাইরাসের বি.১.১.৫২৯ স্ট্রেনে অন্তত ৫০টি মিউটেশন ঘটেছে। এর মধ্যে স্পাইক প্রোটিনেই ৩০টি মিউটেশন ঘটেছে।

করোনা ভাইরাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই স্পাইক প্রোটিন। এর সাহায্যেই মানবকোষে প্রবেশ করে ভাইরাস। কোভিড টিকারও মূল নিশানা তাই স্পাইক প্রোটিন। তবে কি এর ভোলবদলে স্ট্রেনটি আরো সংক্রামক হয়ে উঠেছে? উত্তরের খোঁজ চলছে।

স্ট্রেনটির উৎস নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ধারণা, নির্দিষ্ট কোনো এক রোগীর শরীরে মিউটেশন ঘটে স্ট্রেনটি তৈরি হয়েছে। সম্ভবত, ওই রোগী এইচআইভি আক্রান্ত। এবং তিনি বিনা চিকিৎসাতেই ছিলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এই সপ্তাহে প্রথম চিহ্নিত হয় স্ট্রেনটি। এর পরে আশপাশের অনেক দেশেই এটি ধরা পড়েছে। টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সংক্রমিতদের শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ অস্বাভাবিক রকম বেশি।

হংকং, ইজ়রায়েলে আফ্রিকা ফেরত পর্যটকের শরীরে মিলেছে এই স্ট্রেন।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা