সরিষার তৈল…

শফিউল আলম, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের রাউজান উপজের্লার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমান সরিষার চাষ হয় । ফসলী জমি থেকে উৎপাদিত সরিষা বাজারে বিক্রয় করা ছাড়া ও সরিষা গরুর ঘানি দিয়ে ভেঙ্গে সরিষার তৈল উৎপাদন করতো চাষীরা । এছাড়া এলাকার বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত লোকজন সরিষা ক্রয় করে গরুর ঘানিতে ভেঙ্গে সরিষার তৈল বের করতো । গরুর ঘানি দিয়ে সরিষা ভেঙ্গে উৎপাদিত সরিষার তৈল চাষীরা নিজ ঘরের ভোজ্য তৈল হিসাবে ব্যবহার করতো । চাষী ছাড়া ও এলাকার লোকজন চাষীদের কাছ থেকে ও গরুর ঘানি পরিচালনা কারী লেঅকজনের কাছ থেকে সরিষার তৈল ক্রয় করে নিয়ে ঘরের মধ্যে ভোজ্য তৈল হিসাবে ব্যবহার করতো ।গরুর ঘানিতে উৎপাদিত সরিষার তৈল এলাকার লোকজনের কাছে খাটি সরিষার তৈল হিসাবে কদর রয়েছে । সরিষার তৈল দিয়ে রান্না করা মাছ, মাংস, তরিতরকরীর স্বাদ ছিল বেশী ।কালের বির্বতনে গরুর ঘানি বিলুপ্ত হয়ে যায় । বর্তমানে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় মেশিনে সরিষা ভেঙ্গে সরিষার তৈল উৎপাদন করে তা বাজারে বিক্রয় করা হলে ও গরুর ঘানি দিয়ে উৎপাদিত সরিষার তৈলের চেয়ে স্বাদ কম । আধুনিক প্রযুক্তি মেশিনের ঘানিতে সরিষার ভাঙা তেল তৈরী করা হচ্ছে।তবে এই তেল গরুর ঘানিতে ভাঙা তেলের মতো স্বাদ নেই বলেও চলে। এসব প্রযুক্তি লোহার মেশিনে ভাঙা সরিষার সাথে বিভিন্ন দ্রব্যের মিশ্রণে ভেজাল সরিষার তেল উৎপাদন করায় খাঁটি সরিষার তেলের স্বাদটি পাওয়া যাচ্ছেনা। আগের যুগে এক শ্রেণীর মানুষ দিনরাত গরু দিয়ে কাঠের ঘানি ঘোরায়ে ফোটায় ফোটায় নিংড়ানো খাঁটি সরিষার তেল মাটির হাড়ি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করতেন।এখন রীতিমতো হাট-বাজারের ফুটপাতে দেখা যায়, প্রযুক্তির ব্যবহার হওয়ার পর মেশিনের সরিষা ভেঙ্গে সরিষার তৈল তৈরি করে তা বিক্রি করছেন।তবে এটি গরুর ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল মতো নয় বলে সাধারণ মানুষের জানান।কেন না সরিষার সাথে নানা দ্রব্যাদি মিশ্রিত।রাউজান উপজেলার চিকদাইর,ডাবুয়া,রশিদর পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে গরু দিয়ে কাঠের ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল তৈরি করতেন।তবে এখন গরুর ঘানির পরিবর্তনে ফুটপাতে দেখা যায়,টমটমে উপরে বসানো ইঞ্জিন চালিত শ্যালোমেশিনে সরিষা ভাঙা হচ্ছে।সরেজমিনে দেখা গেছে রাউজান সদর পোষ্ট অফিসের সামনে একটি টমটমে উপরে বসানো হয়েছে সরিষার তেলের ছোট্ট শ্যালোমেশিন। শ্যালোমেশিনে ভাঙা সরিষার তেল কিনতে গাড়িকে ঘিরে ভিড় জমেছে ক্রেতার। হাটহাজারী পশ্চিম ধলই গ্রামের আবদুর রহমান টেন্ডল বাড়ীর মোহাম্মদ বেলাল ও জামালের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানায়, আগে আমার বাপ-দাদারা গরুর ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদন করতো। এটা তাদের ব্যবসা ছিল।
বর্তমান সময়ে এ তৈলের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন করে পুষিয়ে উঠা কঠিন। তাই আধুনিক মেশিন দ্বারা তেল তৈরি করছি। তিন কেজি সরিষা থেকে প্রায় এক কেজি তেল বের হয়। প্রতি কেজি তেল আমরা ২২০ টাকা করে বিক্রি করছি।তেল বের করার পর সরিষার খৈল শুকিয়ে বিক্রি করি।সরিষার খৈল মাছ,মুরগি ও গরুর উৎকৃষ্ট খাদ্য। প্রতি কেজি খৈল পাইকারিতে ৪০-৪৫ টাকা, খুচরায় ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি করা হয়।