নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া

যৌথ সামরিক মহড়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ব্যাপকভাবে নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। আগামী সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে সামরিক মহড়া শুরু হতে যাচ্ছে, সেই মহড়া প্রসঙ্গে সতর্ক করে গতকাল মঙ্গলবার কিম ইয়ো জং এ কথা জানান।

রয়টার্সের বরাতে জানা যায়, এক বিবৃতিতে কিম ইয়ো জং বলেন, ‘এই মহড়া একটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত, আত্মধ্বংসাত্মক কার্যক্রম’, যা উত্তর কোরিয়ার মানুষের জন্য হুমকি এবং কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি করবে।’ তিনি বলেন, ‘বারবার আমাদের সতর্কতা উপেক্ষা করে বিপজ্জনক যুদ্ধের অনুশীলনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ব্যাপক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে হবে।’ উত্তেজনা নিরসনে যখন দুই দেশ পুনরায় সংযুক্ত হচ্ছে, তখন এ ধরনের মহড়ায় যোগ দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ‘বিশ্বাসঘাতকের আচরণ’ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে উত্তর কোরিয়ার এই বিবৃতি প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মার্টিন মেইনার্সের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। প্রশিক্ষণের বিষয়ে কথা বলা নীতিবিরুদ্ধ বলেও জানান তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রও মহড়াকে সামনে রেখে প্রাথমিক প্রশিক্ষণের বিষয়েও কোনো কথা বলেননি। এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত অনুশীলনের সময়, মাত্রা ও পদ্ধতি নিয়ে এখনো আলোচনা করছে দুই দেশ।’

১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের সূত্রে সাড়ে ২৮ হাজার সৈন্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেশন ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। পরে শান্তিচুক্তির পরিবর্তে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে তারা দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থেকে রেহাই পেতে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক ও মিসাইল কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য রাজি হয়। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মহড়াও সীমিত করা হয়। কিন্তু ২০১৯ সালে এই আলোচনা মুখ থুবড়ে পড়ে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া জানায়, তাদের মধ্যে কূটনীতিক আলোচনা উন্মুক্ত। কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তারা একে অপরের ওপর নির্ভর করবে বলেও জানায়। এছাড়া তারা সামরিক মহড়া আয়োজনের পরিকল্পনা করে।

এ প্রসঙ্গে কিমের বোন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কার্যক্রম বলে দেয় তাদের কূটনৈতিক আলোচনা একধরনের ভণ্ডামো এবং কোরীয় অঞ্চলের জন্য উত্তেজনাকর। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তাদের সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই কেবল শান্তি আনা সম্ভব।’ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকির জবাব তারা চরমভাবে দেবে বলেও হুঁশিয়ার করেন উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি কিম ইয়ো জং।