মোটরযানগুলোর অগ্রিম আয় কর বৃদ্ধির প্রতিবাদ

মোটরযানে চাপিয়ে দেওয়া অগ্রিম আয় কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন নেতৃবৃন্দদের সাথে আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দদের মতবিনিময় সভা সংগঠনের কার্যালয়ে গত ২৭.০৬.২০২১ ইং সন্ধ্যা ০৭ টায় অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২.০৬.২০ইং হতে বিনা নোটিশে মোটরযানগুলো হতে অগ্রিম করের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করতে পণ্য পরিবহনের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পণ্য পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দগণ অংশ গ্রহণ করেন। আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি জনাব লতিফ আহমেদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জনাব চৌধুরী জাফর আহম্মদের সঞ্চালনায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক ও কন্ট্রাক্টর এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক হাজী জহুর আহম্মদ, চট্টগ্রাম প্রাইমমুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আবুল হাসেম, বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি জনাব ওয়াজি উল্লাহ, চট্টগ্রাম প্রাইমমুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জনাব মোঃ মাঈনউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিকী, সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মোঃ সেলিম খান, আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি জনাব এম কিবরিয়া দোভাষ, যুগ্ম সম্পাদক জনাব আরিফুর রহমান রুবেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক জনাব মোঃ আলমগীর হোসেন বাবুল, প্রচার সম্পাদক জনাব মোঃ মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনাব মোঃ শামসুজ্জামান সুমন, কার্যকরী সদস্য জনাব জাফর আহম্মদ ভুইঁয়া, সহযোগী সদস্য জনাব মোঃ শাহাদাত হোসেন জুয়েল, পাহাড়তলী সরাইপাড়া ট্রাক মিনিট্রাক ও পিক আপ মালিক সমিতির সভাপতি জনাব মোহাম্মদ ইসলাম খান, সহ-সভাপতি জনাব মোঃ দিদারুল হক,সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মোঃ জামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব আমির পারভেজ, দেওয়ান হাট ট্রাক মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক জনাব মোঃ এমরান শাহিন সভায় মহাসচিব বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও আন্তঃজিলা মালামাল পরিবহন সংস্থা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক চৌধুরী জাফর আহম্মদ তার বক্তব্য বলেন, করোনাকালী দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনার প্রতি সম্মান প্রদর্শণ করে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য, গার্মেন্টস এর পণ্য রপ্তানি তথা দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার স্বার্থে দেশের কথা বিবেচনা করে জীবনের ঝুঁিক নিয়ে পণ্য পরিবহনগুলো সচল রাখলেও সরকারের পক্ষ হতে কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা পণ্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের প্রদান করা হয়নি। অথচ আমাদের অনেক সদস্য ও পরিবহন শ্রমিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। বিগত ২ বৎসর যাবত পণ্য পরিবহন সেক্টরে পরিবহন বাবদ ভাড়া অতিরিক্ত হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে খুচরা যন্ত্রাংশের উপর অতিরিক্ত কর বৃদ্ধি পেয়েছে, জ্বালানী তেলের সাথে ব্যবহৃত লুব্্িরকেন্ট, টায়ার টিউবের মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিবহন সেবায় নিয়োজিত পণ্য পরিবহন মালিকগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। প্রায় সব পণ্য পরিবহন মালিক আর্থিক ক্ষতির কারণে চালক/সহকারীর মাসিক বেতনসহ গাড়ির কিস্তি প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ার সাথে সাথে পরিবহনগুলোর ডকুমেন্ট হালনাগাদ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। উল্লেখ্য করোনা পরিস্থিতিতে আমরা দেশ, জনগণ ও সরকারের কথা চিন্তা করে সর্বদা নিয়োজিত থাকলেও এর কোন সুবিচার পাচ্ছি না উপরন্তু পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট সরকারের কিছু অসামঞ্জস্য সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের পণ্য পরিবহন ব্যবসা বন্ধ হওয়ার হওয়ার পথে। গত ২২.০৬.২০২১ ইং হতে ট্রাক কাভার্ডভ্যান ও প্রাইমমুভারের অগ্রিম আয় কর বৃদ্ধি করে আদায় করা হচ্ছে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান না করে। যা খুবই দুঃখজনক। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত সংগঠনগুলোর সাথে আলাপ আলোচনা না করে একতরফা আইন প্রনয়ণ করে পণ্য পরিবহন মালিকদের উপর জোর করে চাপিঁয়ে দেওয়া এহেন কার্যক্রমের জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অতিসত্বর অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধও আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি অনথ্যায় পণ্য পরিবহন মালিকগণ উক্ত আইনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন। চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক ও কন্ট্রাক্টর এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক হাজী জহুর আহম্মদ তার বক্তব্যে বলেন সরকারের যেকোন গণমূখী উদ্দ্যেগে পণ্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সর্বদা সরকারের পাশে ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সরকারের সহযোগী হিসেবে পণ্য পরিবহন মালিকগণ সর্বদা নিয়োজিত থাকে বিধায় পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারের উচিত পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দদের সাথে পরার্মশ করে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা। বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি জনাব ওয়াজি উল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন মোটরযানের মালিক ও শ্রমিক হচ্ছে একটি সাইকেলের দুটি চাকার মতো। সর্বদা একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত, সরকার কর্তৃক মালিকদের বিপক্ষে কোন আইন বাস্তবায়ন হলে তাতে যেমন মালিকপক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ হবেন ঠিক তেমনি শ্রমিক পক্ষও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। তাই সরকারের উচিত উভয় পক্ষের সুবিধা বিবেচনা করে আইন বাস্তবায়ন করা। চট্টগ্রাম প্রাইমমুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম তার বক্তব্যে বলেন আমরা সর্বদা সরকারের সিদ্ধান্তগুলোকে সম্মান প্রদর্শণ করে আসছি। সরকারের উচিত ছিল পরিবহন গুলোর অগ্রিম আয় কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পূর্বে মালিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দদের সাথে আলাপ আলোচনা করে আইন বাস্তবায়ন করা। চট্টগ্রাম প্রাইমমুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মাঈনউদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন মালিক শ্রমিক সকলেই এক হয়ে কাজ করলে পণ্য পরিবহনে শৃংখলা বজায় থাকবে, তিনি অগ্রিম আয়কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন মালিক সংগঠনের সাথে ঐক্যমত পোষণ করেন, সেই তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশসহ বিভিন্ন সমস্যা সবার মাঝে তুলে ধরেন এবং উক্ত সমস্যা সমাধান লক্ষ্যে বন্দর চেয়ারম্যানকে ১০ দিনের আলটিমেটাম প্রদান করার বিষয় সবার সম্মুখে তুলে ধরেন। সভায় সকল নেতৃবৃন্দ উক্ত অনিয়ম বন্ধে এবং আদায়কৃত টাকা ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানান।