অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট বাতিলের দাবি টিআইবির

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুরে ‘করোনাকালে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাসুম বিল্লাহ। এতে বলা হয়, করোনার প্রভাবে ধসে পড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু গণমাধ্যমের উপরে করোনার যে নেতিবাচক প্রভাব সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। অবিলম্বে করোনাকালে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমকে সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করে নীতি প্রণয়ন এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির পদক্ষেপ নিতে হবে। অতিমারি সংক্রান্ত দুর্নীতি এবং অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে স্বাধীন সাংবাদিকতা বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তথ্যের অধিগম্যতা সহজ করতে হবে।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে ওঠা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, এর বিতর্কিত সব ধারা, অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট ১৯২৩ বিলুপ্তি ঘোষণা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গণহারে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি সরকারের নজরদারিতে আনতে হবে। এই বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনকে সম্মিলিতভাবে প্রয়াস নিতে হবে।

‘পেশাদারি মনোভাব নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতি আস্থা ফেরাতে গণমাধ্যম মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স, সম্পাদক পরিষদ, এডিটরস গিল্ড এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে। ’

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমকে জরুরি সেবা খাত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য ঘোষিত ঋণ প্রণোদনা কর্মসূচির মতো তহবিল ঘোষণা করতে হবে। পেশাগত সুরক্ষার পাশাপাশি শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। তথ্য মন্ত্রণালয় নয়, বরঞ্চ প্রেস কাউন্সিলকে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট সকলের যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। জনস্বার্থে প্রকাশিত তথ্য সুরক্ষা আইন ২০১১ এর সুযোগ গ্রহণের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আলোচনা সভা শেষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কোভিড-১৯ বিষয়ক বিশেষ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।

‘করোনাকালে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নেন অধ্যাপক ড. গীতিয়ারা নাসরিন, অধ্যাপক আফসান চৌধুরী, অনুসন্ধানী সাংবাদিক বদরুদ্দোজা বাবু, জুলফিকার আলী মানিক, মানস ঘোষ, সাজ্জাদ আলম খান তপু, তালাত মামুন, শাকিল আহমেদ ও মিরাজ চৌধুরী।