করোনার উদ্ভট লক্ষণ ত্বকে ফুসকুড়ি

করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, শুকনো কাশি, খাদ্যের স্বাদ ও ঘ্রাণ হারিয়ে ফেলা। এর সঙ্গে আরো আছে মাথাব্যথা, মাংসপেশী ও জয়েন্টে ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও অবসন্নতা। কিন্তু কম হলেও অন্য একটি লক্ষণ আছে। তা হলো বিভিন্ন রকম ফুসকুড়ি বা চামড়ায় লাল লাল দাগ হয়ে যাওয়া। এ বিষয়টি হয়তো অনেক ধীরে দেখা দিতে পারে। এর কারণ ভাইরাসের বিচিত্রতা। রূপান্তরিত করোনা ভাইরাসের কারণে এমনটা দেখা দিতে পারে। অনেকেই এটাকে করোনার সঙ্গে সম্পর্কিত করেন না।
এ কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কিভাবে ত্বকে সংক্রমিত করে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সায়েন্স এলার্ট। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শতকরা ১৭ ভাগেরই বহু লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই দেখা দিয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি। অন্যদিকে শতকরা মাত্র ২১ ভাগ রোগীর একমাত্র লক্ষণ ছিল ত্বকে ফুসকুড়ি। এ বিষয়টি যদি সবার জানা থাকে তাহলে সহজেই করোনা শনাক্তকরণ সম্ভব হতে পারে এবং অনেক আগেভাগে তা সম্ভব হতে পারে। ফলে করোনা সংক্রমণের বিস্তার সীমিত করতে সহায়ক হবে।

পা ফেটে যাওয়ার মতো লক্ষণ
এটা হলো লাল হয়ে ত্বক ফুলে যাওয়া। এটা সাধারণত পায়ের আঙ্গুলে বা পায়ের পাতায় দেখা দিতে পারে। সবটাকে মিলে বলা হয় ‘কোভিড টোজ’। এক থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যে এই ক্ষত রঙ হারাতে থাকে। আরো ফুলে যায়। এ পর্যায়ে চিকিৎসা ছাড়াই সেগুলো মিইয়ে যেতে থাকবে। এমন সংক্রমণ অনেক দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং যুব সমাজের মধ্যে এমন দেখা গেছে। এক্ষেত্রে তাদের আর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। দুটি আন্তর্জাতিক রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, সন্দেহজনক কোভিড-সংশ্লিষ্ট ত্বকের অবস্থায় শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ রোগীর ত্বকের এমন সংক্রমণ দেখতে পাওয়া যায়।

ম্যাকুলোপাপুলার ফুসকুড়ি
এক্ষেত্রে ত্বকে মসৃণ এলাকায় রঙ পাল্টে যায়। স্পেনে এক গবেষণায় ৩৭৫ জন রোগীর ওপর গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ৪৭ ভাগ রোগীর ত্বকে এমন ফুসকুড়ি দেখা গেছে। অধিক ভয়াবহ করোনায় আক্রান্তের সঙ্গে এই লক্ষণ সম্পর্কিত। এমন সংক্রমণ দেখা দেয় মধ্যবয়সী থেকে বয়স্ক রোগীদের। এই লক্ষণটি ১ থেকে ১৮ দিন পর্যন্ত দেখা দেয়। সংক্রমণের ২০ থেকে ৩৬ দিনের মধ্যে এই ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।

হাইভস
এটা উরতিকারিয়া নামে পরিচিত। সাধারণত চুলকানি হয় এমন ত্বকের বিভিন্ন এলাকায় এটা দেখা দিতে পারে। চীন এবং ইতালির চারটি হাসপাতালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শতকরা ২৬ ভাগ রোগী তাদের ত্বকে এমন পরিবর্তন দেখতে পান। অন্য লক্ষণগুলোর পাশাপাশি এগুলো দেখা দিতে পারে। ফলে এটাকে আমলে নিলে করোনা শনাক্তকরণ সহজ হতে পারে। মধ্য বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ খুব বেশি পাওয়া যায়। মারাত্মক আক্রান্তের সঙ্গে এটি সম্পর্কযুক্ত।

ভেসিকুলার ক্ষত
এটা হলো ত্বকের নিচে তরলভর্তি এক রকম লক্ষণ। দেখতে অনেকটা গুটি বসন্তের মতো। তবে এই লক্ষণটি খুব বেশি দেখা যায় না। শতকরা মাত্র ৯ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে।