সাত ঘন্টা রাস্তায় পড়ে ছিলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা!

    হিউম্যান ২৪ ডেস্ক:  বয়স তাঁর প্রায় ৯০ বছর। বয়সের ভারে ক্লান্ত রাবেয়া খাতুনকে রাস্তায় ‘ফেলে দিয়েছেন’ বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বজনদের বিরুদ্ধে। রাজধানীর মিরপুরের ৬০ ফিট সড়কের পাশে প্রায় ৭ ঘণ্টা পড়ে ছিলেন এই বৃদ্ধা।

    এখন তাঁর ঠিকানা মিরপুরের পাইকপাড়ার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামের একটি বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রমে।

    রাবেয়া খাতুনকে চাইল্ড অ্যান্ড এইজ কেয়ারে এনেছিলেন আগারগাঁও প্রবীণহিতৈষী কেন্দ্রের চিকিৎসক মহসিন কবির।

    মহসিন কবির বলেন, ৩০ অক্টোবর সকালে ৬০ ফিট সড়কের আমতলী এলাকায় পড়ে ছিলেন রাবেয়া খাতুন। দুপুরের দিকে সেখান থেকে রাবেয়া খাতুনকে প্রবীণহিতৈষী কেন্দ্রে নিয়ে আসেন দুজন নারী। পরিচয়হীন কাউকে এই হিতৈষী কেন্দ্রে রাখা হয় না। তখন রাবেয়া খাতুনকে শেরেবাংলা নগর থানায় নেওয়া হয়। মহসিন কবির বলেন, ‘থানায়ও রাবেয়া খাতুনের ব্যাপারে কিছু করা সম্ভব হয়নি। তখন গাজীপুরের কাপাসিয়াসহ বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে রাবেয়া খাতুনকে ভর্তি করানোর চেষ্টা করি। তাতেও কিছু করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত চাইল্ড অ্যান্ড এইজ কেয়ারে রাখা হয়।’

    রাবেয়া খাতুনের বিষয়ে ফেসবুকে ভিডিও দেওয়ার পর তাঁর স্বজন পরিচয় দিয়ে কয়েকজন যোগাযোগ করেন বলে জানান মহসিন কবির। তিনি বলেন, ‘তামান্না নামের এক নারী রাবেয়া খাতুনের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে  শুক্রবার বিকেলে আমাকে ফোন করেন। এখানে ওল্ড হোমে কীভাবে এলেন, তা জানতে চান। তখন বলি, যিনি হাঁটতে পারেন না, তিনি রাস্তায় পড়ে থাকলেন কীভাবে?’

    চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা মিলটন সমাদ্দার  বলেন, ‘তামান্না নামের এক নারী নিজেকে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আমাদের এখানে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন এসেছিলেন।’ তামান্না জানান, তিনি রাবেয়া খাতুনের ভাতিজি। কিন্তু কোনো ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তা ছাড়া প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া এখান থেকে কাউকে হস্তান্তর করা হয় না।

    মিলটন সমাদ্দার বলেন, ‘এখানে আনার সময় পেটের পীড়ায় ভুগছিলেন রাবেয়া খাতুন। তিনি স্বামীর নাম তালেব আলী বলে জানিয়েছেন। মিরপুরের লালমাটিয়ার ২২ তলা গার্মেন্টস এলাকায় তাঁর বাসা। সেখান থেকে তাঁর সতিনের ছেলেরা রাস্তায় ফেলে রেখে যান—এমন কথাই রাবেয়া খাতুন আমাদের বলেছেন। মনে হয় বেশ সচ্ছল পরিবারের মানুষ তিনি। তবে রাবেয়া খাতুন এখনো শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। রাবেয়া খাতুনকে আমাদের ওল্ড হোমের নিজস্ব চিকিৎসককে দেখানো হয়েছে। তাঁর মাথা ও শরীরে বেশ ব্যথা রয়েছে।’

    এদিকে রাবেয়া খাতুনের আত্মীয় পরিচয়দানকারী তামান্নার সঙ্গে প্রথম আলো থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ করেননি।