২৬৩টি দোকান রমরমা ব্যবসা করেও ভ্যাট ফাঁকি

চট্টগ্রামের অভিজাত শপিংমল মিমি সুপার মার্কেটের ২৬৩টি দোকান বছরের পর বছর রমরমা ব্যবসা করেও ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৬০টি অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও রিটার্নে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাম মাত্র ভ্যাট জমা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেরের (এনবিআর) নির্দেশ থাকলেও মাত্র ১০টি প্রতিষ্ঠান প্রদর্শিত স্থানে ভ্যাট নিবন্ধন সদন ঝুলিয়ে রাখলেও বাকী ৫০টি রাখেনি। মার্কেটের ২০৩টি প্রতিষ্ঠান কোনো ভ্যাট নিবন্ধনই গ্রহণ করেনি। অথচ এমার্কেটের প্রতিটা দোকান থেকে পণ্যের মূল্যের সঙ্গে ক্রেতার কাছ থেকে হিসাব কষে ভ্যাট আদায় করা হয়েছে।
ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, যে সব দোকানে সারা বছর ভালো বেচাকেনা হলেও হিসাবের চেয়ে কম ভ্যাট দিচ্ছে, একেবারে দিচ্ছে না অথবা অন লাইনে ভ্যাট নিবন্ধনই গ্রহণ করেনি সে সব দোকান থেকে হিসাব মতো রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট গোয়েন্দারা অভিযান পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের বড় শপিংমলের দোকানগুলোর মধ্যে ৭৮ ভাগই ভ্যাট দেয় না। দেশের অন্যান্য মার্কেট ও খুচরা পর্যায়েও প্রায় একই অবস্থা। দেশের মধ্যে প্রতিযেগিতামূলক ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সকল ভ্যাটযোগ্য ব্যবসাকে ভ্যাট প্রদান করতে হবে। দেশের অন্যান্য শপিংমল, মার্কেট ও বিভিন্ন স্থানে ভ্যাট গোয়েন্দারা অভিযান অব্যাহত থাকবে। আশা করছি সকলে ভ্যাটের আওতায় আসবে।
ভ্যাট আইনের বিধান অনুসারে নিবন্ধন গ্রহণ না করায় এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দারা রবিবার ভ্যাট অনিবন্ধিত ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেছে। একইসাথে নিবন্ধিত ৬০টির মধ্যে ৫০টি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন সনদ ঝুলিয়ে না রাখায় ভ্যাট আইনে তাদের বিরুদ্ধেও অনিয়ম মামলা করা হয়েছে। এই অনিয়মের দায়ে তাদের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হবে। একই সঙ্গে ব্যবসা শুরু থেকে তাদের প্রকৃত খরচের ভিত্তিতে ফাঁকিকৃত ভ্যাট হিসাব করে বকেয়া ও মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদসহ জরিমানা আদায়ের জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার উপ পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে গত ৭ সেপ্টেম্বর এই মর্কেটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দাদে তদন্তে দেখা যায়, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ, বায়েজিদ বোস্তামি সড়কে অবস্থিত মিমি সুপার মার্কেটে ২৬৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের ভোগ্যপণ্য ন্থানীয় ও আমদানি করে সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে। ভ্যাট আইন ২০১২ অনুযায়ী বাধ্যবাধকতা থাকলেও এই ২০৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ভ্যাট অফিসে দাখিলপত্রও জমা দেয় না।
এ মার্কেটের যে সব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধিত গ্রহণ না করায় মমলা করা হয়েছে, তুলি শাড়ি, পিন্ধন, নিউ আঁচল, আদরী, অপরূপা শাড়ি, মহসিন’স, মিস আর্ট, ফ্যামিলি ফুড, আল আয়েশা বোরকা, মিউজিক ক্লাব, ড্রিম গার্ডেন, আয়শা বোরকা ফ্যাশন, ইউটেন সিকো, জেএম স্টোর, ঠুমরী, লাইসিয়াম, মিমি জুয়েলার্স, অন্যন্যা, অংকুর, আফগান বোরকা, নিউ মডার্ন মাহী জুয়েলার্স, তুর্কি ফ্যাশন ১, তুর্কি ফ্যাশন ২, নিউ তুর্কি ফ্যাশন, আরা, নিউ কনক বাহার জুয়েলার্স ১, নিউ কনক বাহার জুয়েলার্স ২, বনরূপা জুয়েলার্স, রূপমহল জুয়েলার্স, মোহনা জুয়েলার্স, তরঙ্গ জুয়েলার্স, মদিনা বোরকা, আল ফারিয়াল জুয়েলার্স, ভিক্টোরিয়া, সাফা ফ্যাশন, নিউ কনক বাহার জুয়েলার্স ৩, কাশ্মির ফ্যাশন, মিনি ইন্ডিয়া, এসপি আশালতা জুয়েলার্স, আল ফ্যাশন জুয়েলার্স, নিউ কনক মালা জুয়েলার্স, সন্দ্বীপ জুয়েলার্স, আরব জুয়েলার্স, হুজুরের দোকান ১, বধুবরণ জুয়েলার্স, টাইম স্কয়ার, জেমস গ্যালারি, ব্লু স্টোন, পূরবী জুয়েলার্স, আইসি, আল মদিনা বোরকা, অঙ্গনা, কটন ইন, স্টেপ ইন, লেডিস গ্যালেরি, রেভলন, চ্যালিস, হিপস্ ওয়্যার, কে রহমান কালেকশন, পপস্ টেইলার্স, হিজাব ১, হিজাব ২, কিডস্ এন্ড পপস, আর এক্স সুজ, আল মালেক ১, আল মালেক ২, বো-বে, সু-ডেইজি, গার্লী সুজ, এমকে কালেকশন ১, আর এক্স সুজ, এম কে কালেকশন ২, এক্সক্লুসিভ প্লাস, ফ্যাশন কালেকশন, সু গ্যালারি, ইউর চয়েস, হিল টুটু, নেক্সট কালেকশন, লোটাস, ফ্যাশন ফেয়ার, নিউ অনন্ত সুজ, সু এক্সপ্রেস, রাবা সুজ, তৃষা টেইলার্স, পাপ্পু টেইলার্স, কমপ্লিটম্যান ১, মেসার্স অনিক্স, হুজুরের দোকান ২, শৈশব, চেনাসুর, হান্টার চয়েস, দি সেল হাউজ, রবিন সুজ, পারি, কমপ্লিটম্যান ২, পেন্টালোনস, মিনিমুন, স্টাইল কালেকশন, শুচি, থাইসপ, ওপাল হাউজ ১, ওপাল হাউজ ২, স্প্যালাস, আরিজা, ম্যাক, রং বে রং, নিউ চ্যান্সেলর, চলতি ফ্যাশন, মিমি লেডিস টেইলার্স, রিয়া টেইলার্স, ড্রাগন মার্ট, হুজুরের দোকান ৩, জেলোজিয়া, আবির লেডিস টেইলার্স, নেক্সটেল, প্রাবন টেইলার্স, পেন্ট ফেয়ার, প্রাইম স্টোর, ফেয়ারী লেডিস টেইলার্স, অপ্সরা ফ্যাশন হাউজ, অর্চনা, প্রিয়া টেইলার্স, ললনা টেইলার্স, কারেন্ট বুক সেন্টার, গ্লিমস, প্রেনা টেইলার্স, মায়াবী ফ্যাশন, আলো ফ্যাশন, রুৎমিলা, সাগর টেইলার্স, এম এম টেইলার্স, নিউ কৃষ্ণা টেইলার্স, নকশী টেইলার্স, নিউ মাস্টার টেইলার্স, রিমিক্স টেইলার্স, মিতা স্টোর, আফগান বোরকা, অনিক টেইলার্স, শাওন মনি, অঙ্গসাজ টেইলার্স, সানি টেইলার্স, অন্তর টেইলার্স, পুতুল টেইলার্স, দেবদুত লেডিস টেইলার্স, মেসার্স আচঁল, মেসার্স তন্বী, হ্যাপী টেইলার্স, নাহার আই টি পার্ক, স্টার অন্তর টেইলার্স, নিউ প্রিয়া টেইলার্স, আশরাফিয়া টেইলার্স, উইং প্লেনেট, পূরবী জুয়েলার্স ১, পূরবী জুয়েলার্স ২, পরী লেডিস টেইলার্স, চৌধুরি লেডিস টেইলার্স, তুর্কি ফ্যাশন, নোহা লেডিস টেইলার্স, জৈতা টেইলার্স, শান্তা লেডিস টেইলার্স, মিতা স্টোর, মীম ফ্যাশন, নিউ মনি, অঙ্গনা টেইলার্স, জিপি ধর, ফ্যাশন গার্ডেন, দিগন্ত বোরকা, এরাবিয়ান বোরকা, আচঁল স্যুট, গ্যালাক্সি জুয়েলার্স, নিশা টেইলার্স, নবরূপা লেডিস টেইলার্স, ওমেন্স গ্যালারি, সৌদিয়া বোরকা, আচঁল স্যুট, আজিজ কর্ণার, ইয়ারা জুয়েলার্স, মডার্ণ আমানত জুয়েলার্স, নিরব টেইলার্স, আবরণ টেইলার্স, নিউ পূণম জুয়েলার্স, ফ্রেন্ডস ফুড, রূপনগর, দি চিক লেদার, পারু টেইলার্স, লা বেলে রোব, সুবর্ণা, জ্যুতিকা ফ্যাশন, তৃষাজ ক্লজেট, স্টিচ ইন স্টাইল, রূপায়ন টেইলার্স, স্মার্ট ওমেন্স কালেকমন, সালাম টেইলার্স, সেলাইঘর লেডিস টেইলার্স, হাফসা টেইলার্স, নিপা টেইলার্স, চিনা টেইলার্স, চিক টেইলার্স, আলম কর্ণার, ময়ূরাক্ষী, মনে রেখ, মো. আবুল কাশেম, সূচি টেইলার্স।
নিবন্ধিত কিন্তু ব্যবসায়িক প্রাঙ্গনে ভ্যাট সনদ ঝুলানো নেই তারা হলো-সাথী, রূপসী, রজনীগন্ধা, সাদমান, মেসার্স তিশা, কানন, জেন ডিপার্টমেন্ট স্টোর, নিউ শাওন ভাদো ১, নিউ শাওন ভাদো ২, কাকন, আঁচল, লাগান, সেন্ট্রাল, বধূ, নিউ আকর্ষণ ১, ইয়াং লেডি, নিউ আকর্ষণ ২, নিউ জারা, জারা, নিপুন, মুম্বাই ফ্যাশন, সবিয়া, নিউ কানন, মানসী, সামস্, বন্ধন, সেভওয়ে, মুফতী, হুজুরের দোকান, ডায়মন্ড জুয়েলার্স, অনামিকা জুয়েলার্স, আছমি জুয়েলার্স, সানন্দা জুয়েলার্স, রাজলক্ষী জুয়েলার্স, মন্দীরা জুয়েলার্স, প্যারাডাইস জুয়েলার্স, চন্দ্রিমা জুয়েলার্স, চন্দ্রিকা জুয়েলার্স, রূপশ্রী জুয়েলার্স, রূপরাজ জুয়েলার্স, তানিশক জুয়েলার্স, পূরবী জুয়েলার্স, নিউ বসুন্ধরা জুয়েলার্স, বিশাল জুয়েলার্স, সঙ্গিনী জুয়েলার্স, এস বি জুয়েলার্স, জান্নাত, কনক চাঁপা, বেস্ট আই সি টি, প্রাচী টেইলার্স।