শুভ জন্মাষ্টমী

দুষ্টের দমন আর সজ্জন মানুষদের রক্ষা করার জন্য স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথিকে ভক্তরা শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্‌যাপন করে থাকেন। আজ মঙ্গলবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং আনন্দ–উৎসবের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করবেন ভক্তরা।

প্রতিবছর শুভ জন্মাষ্টমীতে শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজন থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। তবে এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোনো শোভাযাত্রা, মিছিল বা সমাবেশ হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দিরেই আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি থাকবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ‘সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল ভাবনা।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, ‘শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে।’

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে অশুভ শক্তিকে দমন করে সত্য ও সুন্দর প্রতিষ্ঠা করতে আবির্ভাব ঘটেছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের। তাঁর আবির্ভাব বিশ্বের ইতিহাসে এক নতুন যুগের সূচনা করে। নির্যাতিত–নিপীড়িত মানুষকে রক্ষায় তিনি পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেন, অন্ধকার সরিয়ে পৃথিবীকে আলোয় উদ্ভাসিত করেন।

শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মণ্ডল গতকাল এক বিবৃতিতে জাতি–ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে শুভ জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর আগে ৮ আগস্ট সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, শুভ জন্মাষ্টমীর দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আজ সকাল আটটায় দেশ, জাতি ও বিশ্বমানবের মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ এবং রাতে শ্রীশ্রী কৃষ্ণপূজা। পুরো আয়োজন সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে।