দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রামকে বিলবোর্ডের জঞ্জালমুক্ত করেছি

দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রামকে বিলবোর্ডের জঞ্জালমুক্ত করেছেন উল্লেখ করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরে সবুজায়নের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছি। কিন্তু নগরে সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়েছে।
এরপরও আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে চট্টগ্রামের মানুষ প্রাণ খুলে নিশ্বাস নিতে পারছে, ঘটেছে সবুজের সমারোহ। নগরবাসী এখন নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে রাস্তায় চলাফেরা ও নির্মল বিনোদন খুঁজে পেয়েছে।

তিনি বলেন, একসময় প্রাচ্যের রানি হিসেবে পরিচিত ছিল চট্টগ্রাম। পাহাড়, সাগর, নদী – তিনের সমন্বয়ে চট্টগ্রাম হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি। ধীরে ধীরে অপরূপ এ নগরের জীবন-যাত্রা দুঃসহ হয়ে উঠেছিল। নিধন হচ্ছে পাহাড়, দৈত্যাকার বিলবোর্ডে ঢেকে গিয়েছিল পুরো চট্টগ্রাম নগরী। মূলত অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শহরমুখী মানুষের স্রোত, অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ এবং যেখানে-সেখানে শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠাই এর মূল কারণ।

চসিকের সবুজায়ন প্রকল্পে বিভিন্ন ওয়ার্ড, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সড়কমোড় পরিবেশসম্মত, সুদৃশ্য, দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। এ ছাড়াও মোড়ে মোড়ে নান্দনিক ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত যাত্রী ছাউনি নির্মাণ ও ডোর টু ডোর ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে রাস্তার ডাস্টবিন অপসারণ করে যানজটমুক্ত পরিবেশবান্ধব বিশ্বমানের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম গড়ে তোলার প্রয়াস চালিয়েছি।

কাজীর দেউড়ি আউটার স্টেডিয়াম এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে ছিল অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের অবাধ বিচরণস্থল ছিল উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করা থাকতো এখানে। যে কারণে এ সড়কে পথচারীদের দুর্গন্ধে নাকে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হতো। ইতোমধ্যে এই এলাকায় সুইমিং পুল, আউটার স্টেডিয়ামের ফুটপাত সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় আসায় পথচারীদের আর নাকে রুমাল দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে স্টেডিয়ামের চারদিকে নয়নাভিরাম দৃশ্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা নগরবাসীসহ যেকোনো অতিথিকে আকর্ষণ করবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) আউটার স্টেডিয়ামের ভেতর মাঠের চারদিকে ড্রেনসহ ওয়ার্কওয়ে, মুক্তমঞ্চ ও মাঠের সবুজায়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন।

চসিকের অর্থায়নে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পে রয়েছে আউটার স্টেডিয়ামের ভেতরে মাঠের চারদিকে ড্রেনসহ ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ, মুক্তমঞ্চ নির্মাণ ও মাঠের সবুজায়নসহ আধুনিকায়ন এবং সাইফুদ্দিন খালেদ সড়ক থেকে নেভাল অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সড়ক নির্মাণকাজ। এ ছাড়াও রয়েছে আলোকায়ন ব্যবস্থা, মাঠের চারদিকে প্রশস্ত ওয়াকওয়ে, মাঠে উন্নতমানের ঘাস লাগানো, বাচ্চাদের খেলাধুলা এবং প্রতিবন্ধীদের হাঁটার সুব্যবস্থা। কাজের সুবিধার্থে তিন লটে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রথম লটে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকা, দ্বিতীয় লটে ১ কোটি ৮৩ লাখ ৬২ হাজার টাকা এবং তৃতীয় লটে ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন, সলিম উল্লাহ বাচ্চু, শৈবাল দাশ সুমন, চসিক প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, থিয়েটার ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহমেদ ইকবাল হায়দার চৌধুরী, চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, ঝুলন কুমার দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান, উপ সহকারী প্রকৌশলী সুমন সেন ও ঠিকাদার খায়রুল আব্বাস চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা হারুন উর রশিদ।