৩৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ১০ জনকে কারাদণ্ড

পাহাড় দখল করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তৈরি করা ৩৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় উচ্ছেদ কাজে বাধা দেওয়ায় দায়ে এই সময় ১০ জনকে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (২৪ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সিডিএ লিংক রোড এলাকার পাহাড়ে সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পরিবেশ অধিদফতর, সিএমপিসহ সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন।

অভিযানে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায়, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম, আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুস সামাদ, চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ এবং হাটহাজারীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ উল্ল্যাহ নেতৃত্ব দেন।

অভিযানে সিডিএ লিংক রোডের দুইপাশের ১৬টি পাহাড় থেকে প্রায় ৩৫০টি ঝুঁকিপূর্ণভাবে তৈরি করা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বায়েজিদ প্রান্ত এবং সীতাকুণ্ড প্রান্ত থেকে জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদফতরের দুইটি টিম ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

অভিযানের শুরুতে হাটহাজারী উপজেলার জালালাবাদ মৌজা এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী দল পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে বসবাসকারীদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। তাদের হামলায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী দলের দুই কর্মী আহত হন।

এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী দলের দুই কর্মীকে মারধর করায় ১০ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৭ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পরিচালিত এই উচ্ছেদ অভিযান দুইপ্রান্ত থেকে শুরু হয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান ক্যাম্পাস এলাকায় এসে শেষ হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম বলেন, করোনা ভাইরাস দুর্যোগ পরিস্থিতিতে এপ্রিল-মে মাসে নবনির্মিত সিডিএ লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড় কেটে ব্যক্তিগত ও সরকারি জমিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্রচুর অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। এইসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বুধবার অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তিনি বলেন, অভিযানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তৈরি করা ৩৫০টি ঘর-বাড়ি উচ্ছেদের পাশাপাশি বিদ্যুৎ এর ৩০টি মিটার জব্দ করা হয়েছে। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় বিনা মালিকানার জমিতে কীভাবে বিদ্যুৎ মিটার সংযোগ দেওয়া হলো তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনিক তদন্ত করা হবে।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এবং জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

অভিযানে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের পরিচালক (মেট্রো) নুরুল্লাহ নূরী, পরিচালক (অঞ্চল) মোয়াজ্জেম হোসেন। রেলওয়ের পক্ষে ছিলেন এস্টেট অফিসার মাহবুবুল আলম। সিমএমপি টিমের নেতৃত্বে ছিলেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (বায়েজিদ জোন) পরিত্রাণ তালুকদার।