এক দশক পর বাংলাদেশি পতাকাবাহী কনটেইনার শিপ ‘সারেরা চট্টগ্রাম’

মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করলো ‘এমভি সারেরা’। জাহাজটির পেছনে ইংরেজিতে বড় হরফে লেখা ‘সারেরা চট্টগ্রাম’। এক দশক পর আবার লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে আমদানি-রফতানি পণ্যভর্তি কনটেইনার পরিবহন করবে জাহাজটি।

১৮৪ দশমিক ৫১ মিটার লম্বা, সাড়ে ৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজটির কনটেইনার ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৫৫০ টিইইউ’স (২০ ফুটের এককে)। জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং বন্দরে কনটেইনার পরিবহন করবে। রোববার (২১ জুন) দুপুরে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) ৪ নম্বর জেটিতে আনা হয়।

জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্রুপ, যার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। কর্ণফুলী গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আজমির হোসেন চৌধুরী জানান, এক দশক আগে এইচআরসি, কিউসি, বিএসসির কনটেইনার জাহাজ ছিলো বাংলাদেশি পতাকাবাহী। এর পর বিদেশি জাহাজই কনটেইনার পরিবহন করে আসছে। কর্ণফুলী গ্রুপ ‘এমভি সারেরা’ ও ‘এমভি সাহারে’ নামের দুইটি জাহাজ কিনে বাংলাদেশি পতাকায় পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, আন্তর্জাতিক ক্লাস সার্টিফিকেশনসহ আনুষঙ্গিক সব অনুমোদন ও ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে। ‘সারেরা’ নামের জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে এনে রফতানির কনটেইনার তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পরশু মঙ্গলবার দুপুরে বন্দর ছেড়ে যাবে।

এনসিটির অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের সিওও ক্যাপ্টেন তানভির জানান, এক দশক পর বাংলাদেশি পতাকাবাহী কনটেইনার শিপ এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এটি একটি মাইলফলক। জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে খালি আনা হয়েছে। ১ হাজার টিইইউ’স রফতানি পণ্যভর্তি ও ৩৫০ টিইইউ’স খালি কনটেইনার নিয়ে সিঙ্গাপুর ও পোর্ট কেলাংয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।

বাংলাদেশি পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজ আন্তর্জাতিক রুটে আবার যুক্ত হওয়ায় মেরিটাইম সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে জানিয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। দেশের কনটেইনারবাহী রফতানি ও আমদানি পণ্য পরিবহনে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। দেশের টাকা দেশে থাকবে। দ্বিতীয়ত বাংলাদেশি ক্যাডেট ও রেটিংসদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশি পতাকাবাহী হওয়ায় জাহাজ দুইটি বার্থিং, কনটেইনার প্রাপ্যতার কোটাসহ অনেক বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবেন। আমদানিকারক বা রফতানিকারকরাও নিঃসন্দেহে কিছু বাড়তি সুবিধা ভোগ করবেন।

শিপিং খাতে অভিজ্ঞ কর্ণফুলী গ্রুপ বিভিন্ন ফিডার অপারেটর কোম্পানি ও মেইন লাইন অপারেটরের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে। ফিডার অপারেটর হিসেবে আত্মপ্রকাশের এ কর্মযজ্ঞে অন্তত ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।