করোনা ভাইরাস ল্যাবে তৈরি হয়েছিল

বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ প্রাণ কেড়ে নেয়া করোনা ভাইরাস ‘সারস-কভ-২’ প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়নি। ভাইরাসটি একটি ল্যাব বা পরীক্ষাগারে কৃত্তিম উপায়ে তৈরি করা হয়েছে। এমনটা দাবি করেছেন নরওয়েজিয়ান বিজ্ঞানী বিরগার সরেনসেন। এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্সের সাবেক প্রধান স্যার রিচার্ড ডিয়ারলাভ।

মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস অনুসারে, কোয়ার্টারলি রিভিউ অব বায়োফিজিক্সে প্রকাশিত করোনা ভাইরাসের একটি সম্ভাব্য টিকা ‘বায়োভেক-১৯’ নিয়ে একটি যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে ভাইরাসটি ল্যাবে তৈরি বলে দাবি করেন সরেনসেন। তার সঙ্গে ওই প্রতিবেদনটির অপর এক গবেষক হচ্ছেন, বৃটিশ অধ্যাপক আক্সগুস ডালগ্লেইশ।
প্রতিবেদনটিতে, করোনা ভাইরাসেরর স্পাইক প্রোটিনের কিছু সিকুয়েন্স কৃত্তিমভাবে যুক্ত বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া, প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ভাইরাসটির মধ্যে মিউটেশনের ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ থেকে ইঙ্গিত মেলে যে, ভাইরাসটি আগ থেকেই মানুষের শরীরের সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খাইয়ে নিয়েছিল।
সরেনসেন স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন ভাইরাসটিতে এমন অনেক উপাদান আছে যেগুলোর সঙ্গে ২০০২ সালের সারস করোনা ভাইরাস থেকে অনেক ভিন্ন।
এসব উপাদান এর আগে প্রকৃতিতে কখনো শনাক্ত হয়নি। সরসেন বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এর আগে বহু বছর ধরে সম্মিলিতভাবে করোনা ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা করেছে। এসব গবেষণায় উভয় দেশই অংশগ্রহণ করেছে।

সারস-কভ-২ বা নভেল করোনা ভাইরাসটি সর্বপ্রথম শনাক্ত হয় চীনের উহানে। বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের ধারণা, উহানের এক বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে এটি মানবদেহে প্রবেশ করেছে ও এর উৎপত্তি হয়েছে বাদুড়ের দেহে। তবে কয়েক মাস ধরেই ভাইরাসটি চীনের কোনো ল্যাবে তৈরি হয়েছে বলে অনেকে দাবি করেছেন। যদিও উহানের ল্যাব কর্তৃপক্ষরা এমন দাবিগুলোকে পুরোপুরি সাজানো বলে বর্ণনা করেছেন। তারা জানান, উহানের ল্যাবগুলোয় কখনোই সারস-কভ-২ বা এর সঙ্গে মিল রয়েছে এমন ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়নি।
সরেনসেন জানান, চীনা বিজ্ঞানীরাই সবার আগে ভাইরাসইটির সিকুয়েন্স প্রকাশ করেছিল। পরবর্তীতে ওই সিকুয়েন্সের উপর ভিত্তি করেন যৌথ গবেষণায় সেগুলো কৃত্তিম দাবি করেন তিনি। সরেনসেন আরো দাবি করেন, ভাইরাসটি নিয়ে অন্যান্য গবেষণা ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে চীন।

এদিকে, সরেনসেনের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্সের সাবেক প্রধান স্যার ডিয়ারলাভ। তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, বাদুড় থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষার সময় দুর্ঘটনাক্রমে ল্যাবের বাইরে বেরিয়ে পড়তে পারে সারস-কভ-২। তিনি আরো বলেন, তবে ভাইরাসটি ইচ্ছে করে বাইরে ছড়িয়ে দেয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। চীন ইতিমধ্যে ভাইরাসটি নিয়ে তথ্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।