আতংকের জনপদ রাউজান, ৮ মাসে ১২ খুন

শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া, বাগোয়ানের গরিবউল্ল্রাহ পাড়া, পুর্ব রাউজান, হলদিয়া, রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ফরেষ্ট অফিস এলাকায় গত ৮ মাসে খুন হয়ে ৮জন । বিএনপির বিবদমান দু গ্রুফের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক দু গ্রুফের নেতা কর্মী । গত বৎসরের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ফরেষ্ট অফিস সংগ্লন্ন সাবেক সংসদ সদস্য সদস্য এবি এম ফজলে করিম করিম চৌধুরীর বাগানবাড়ীর কর্মচারী রাউজানের পুর্ব রাউজান এলাক্ওা বাসিন্দ্বা মোঃ ইউসুফকে কে বা কারা বাগান বাড়ীর ভেতরে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পর রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া এলাকার বাসিন্দ্বা শ্রমিক লীগ নেতা আবদুল মান্নানকে রাউজান রাবার বাগান এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করে।

রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের আজম খান নামে এক যুবককে হত্যা করা হয় । গত ২৪ জানুয়ারী প্রকাশ্যে দিবালোকে রাউজানের নোয়াপাড়ায় জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে ৩ যাওয়ার সময়ে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে । পরবর্তী রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরী হাট এলাকার বাসিন্দ্বা যুবলীগ নেতা সিএনজি চালক হাসানকে তার ঘর থেকে ধরে নিয়ে পালোয়ান পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। রাউজানের চিকদাইর নেওয়াজ গাজী মার্দ্রসার শিক্ষক মাওলানা আবু তাহের রাতেই ঘর থেকে বের হয়ে নিখোজ হয় । পরে গহিরা কালচান্দ চৌধুরী ব্রীজের পাশে সর্তা খালে তার লাশ পাওয়া যায় । গত রমজান মাসে হলদিয়া আমির হাটে প্রকাশ্যে দিবালোকে যুবদল নেতা কমর উদ্দিন টিুটুকে পিঠিয়ে হত্যা করে তার দলের একই গ্রুফের নেতা কর্মীরা । গত ঈদের ২য় দিন পর হলদিয়ায় জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে তার ভাই ও পরিবারের অনান্য সদস্যরা এডভোকেট নুরুল আলম বকুলকে বসতভিটায় পিটিয়ে হত্যা করে।

রাউজানের পাহাড়তলী মহামনি এলঅকায় সিএনজি চালক জাফরকে পিটিয়ে হত্যা করে। রাউজানের পুর্ব গহুজরা ইউনিয়নের হোয়ারা পাড়া মোবারক খালের পাশে রুবেল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে। গত ১৯ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে বাগোয়ান ইউনিয়নের গরিউল্ল্রাহ পাড়ায় যুবদল নেতা মানিক আবদুল্ল্রাহকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । গত ২২ এপ্রিল মঙঙ্গলবার দুপুর ১২ টার সময়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে রাউজানের পুর্ব রাউজান জোরের কুল এলাকায় দুবৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে মোঃ ইব্রাহিম নামে এক যুবককে । ছাত্রদলের সাবেক নেতা পেয়ার আহম্মদ চৌধুরী বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে উত্তর গুজরা আদ্যপিঠ মন্দিরে হত্যার উদ্যোশে গুলি করে সন্ত্রাসীরা । সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্বক ভাবে আহত হয় সাবেক ছত্রদল নেতা পেয়ার আহম্মদ চৌধুরী বাবু। রাউজানের নোয়াপাড়ায় যুবদল নেতা উজ্জল, জাহেদ সহ ৮জন যুবদল ছাত্রদলের নেতা কর্মী আহত হয় । রাউজান উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নানকে পিটিয়ে আহত করেন তার প্রতিপক্ষ একই দলের লালিত সন্ত্রাসীরা । রাউজানের কদলপুরে যুবদল নেতা বাছুল, নাসির উদ্দিনকে পিটিয়ে গুলি করে মারাত্বক ভাবে আহত করে । এলাকায় গত তিনদিনে ব্যবধানে চট্টগ্রামের রাউজানের আবারও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম( ২৮) নামের এক যুবদলকর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সস্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে রাউজান সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব রাউজান গাজীপাড়া এলাকার একটি দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ইব্রাহিমের ওই এলাকার গুচ্ছগ্রামের মোহাম্মদ আলমের ছেলে। বাড়ির দেড় কিলোমিটার দূরে তিনি খুন হন। ইব্রাহিম বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। তাঁর আড়াই বছর এক ছেলে ও এক বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় করে আসা ১০ থেকে ১২ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসরা ইব্রাহিমকে মাথায় ও বুকে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত ইব্রাহিম এলাকায় বালু ও কাঠের ব্যবসা করতে। বালু ব্যবসা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে ধারণ করছে স্থানীয়রা। নিহতের পিতা মোহাম্মদ আলম বলেন, আমার ছেলে বালু, ইট ও কাঠের ব্যবসা করতে। তাঁর কোন শত্রু নেই। সেই ঘুম থেকে উঠে বাড়ি এক কিলোমিটার দূরে একটি দোকানে বসেছিল।এসময় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করে হত্যা করেন।আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নিহতের চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম বলেন, তাঁর ভাতিজাকে তাঁর সামনেই গুলি করে সন্ত্রাসীরা৷ এ সময় এগিয়ে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে তিন চারটি গুলি ছোড়ে। আমি এবং আমার বড় ভাই কোনো রকমে পালিয়ে জীবন রক্ষা করি। আমার ভাতিজা যুবদল করলেও কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। এদিকে ইব্রাহিমকে হত্যা করে চলে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা দুপুর ২ টায় রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে সিএনজি চালক নাঈম উদ্দিনকে(২৫) গুলি ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মৃতভাবে ফেলে যায়৷তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাউজান উপজেলা হাসপাতাল নিয়ে যায়। তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত নাঈম উদ্দিন ওই ইউনিয়নের আব্দুল মুন্দার তালুকদার বাড়ির আবুল কালামের ছেলে। তাঁর বড় ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, কিছুদিন আগে আমার কাছে ২২ লাখ টাকা চাঁদাবাদি করে মোহাম্মদ রায়হান ও ধামা ইলিয়াস। চাঁদা না দেওয়া আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার দুপুরে আমার ঘর ভাংচুর করে ৭টি মোবাইল ফোন,পাঁচ ভরি স্বর্ণ ও প্রায় ৭লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমার ছোট ভাই নাঈমকে পায়ে ও হাতে গুলি করে মর্মান্তিকভাবে আহত করে পালিয়ে যান তাঁরা। রাউজানে একের পর এক হত্যা, হানাহনির ঘটনায় সাধারন মানুষ আতংকের মধ্যে জীবন যাপন করছেন ।

রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় হাট বাজারে সন্ত্রাসীদের আতংকে ব্যবসা প্রতিষ্টানে কেনা কাটা কমে গেছে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান । সাধারন মানুষ কেনা কাটা করতে ব্যবসা প্রতিষ্টানে আসছে কম । সন্দ্ব্যার পর ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্দ্ব করে বাড়ীতে চলে যায় । রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসী আরফাত মামুনকে অস্ত্র সহ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে । খুন ও হানাহনির ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরতে পুলিশ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।উল্লৈখ্য, রাউজানে বেশীর ভাগ হত্যাকান্ডের ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে মাটি কাটা নিয়ে দন্দ্বের কারনে ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে।