বিসর্জনে বিষণ্ণতার সুর

বিসর্জনের পরও বলা হয়, “আসছে বছর আবার এসো।” বিভেদ ভুলে আলিঙ্গন, মিষ্টিমুখ যেন শুভ সূচনার দ্যোতক। শত্রু বিনাশ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার এক প্রয়াস এই বিজয়া।

চট্টগ্রামে প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার ঘোষণার প্রেক্ষিতে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনও বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেএমসেন হলে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।  এর পর মহানগরের পূজামণ্ডপগুলোর প্রতিমা বিসর্জনের কর্মসূচি শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকরা প্রতিমা বিসর্জনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত করার পর এ সিদ্ধান্ত নেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা।

আজ দশমী৷ বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা৷ এবার উমার শ্বশুরবাড়ি ফেরার পালা৷ আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর৷ আসছে বছর আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ দেবী পাড়ি দেন কৈলাসে৷ এরপর হবে সিঁদুর খেলা, কোলাকুলিতে শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ৷ হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা৷ বিসর্জনের জন্য ঘাটে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা৷

প্রথা মেনে দশমীর সকাল থেকেই বেলুড় মঠে বিশেষ পুজো। সন্ধেয় বিসর্জন। বেলুড়ের মূল মন্দিরে আরতির পর শুরু হবে উমা বিদায়ের মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান৷ এরপর প্রথা মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।ষষ্ঠী থেকে নবমী। করোনা আবহেও শোভাবাজার রাজবাড়ির সদস্যরা ব্যস্ত ছিলেন বাড়ির মেয়ে উমার খাতির-যত্নে। তবে দশমীর সকালে বিষাদের সুর। সকালে দশমী পুজোর পর রীতি মেনে প্রথমে দর্পণে প্রতিমা নিরঞ্জন। এরপর দেবীকে বরণ করবেন রাজবাড়ির মহিলা সদস্যরা। কনকাঞ্জলি দিয়ে শুরু হয় উমার বিদায় পর্ব।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত জানান, চট্টগ্রাম জেলায় ১ হাজার ৯৬৪টি পূজামণ্ডপে এবার দুর্গাপূজা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বজনীন পূজা ১ হাজার ৫৫৩টি। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিভিন্ন উপজেলায় সকালে এবং বাকিগুলোতে বিকেলে সুশৃঙ্খলভাবে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি জানান, আমরা প্রতিবছরের মতো এবারও পূজামণ্ডপের কাছের পুকুর, দীঘি, জলাশয়, বড় খাল ও নদীতে প্রতিমা বিসর্জন করেছি।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি আবুল কালাম জানান, পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যানজট নিরসন, প্রতিমা নিয়ে আসা ট্রাক চলাচল ও বিসর্জনে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।