নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে কোরবানির পশু কিনতে ডিজিটাল হাট

করোনা মহামারির সময়ে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে কোরবানির পশু কিনতে বসছে ডিজিটাল হাট।রোববার এই ডিজিটাল কোরবানী পশুর হাট হতে ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দামের একটি গরু কিনে এর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম ।ভার্চুয়াল এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ , তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম ।মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি সেবাগুলো দিনে দিনে আধুনিক হচ্ছে এবং সেটির সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। করোনা মহামারী থেকে সুরক্ষা পেতে মানুষ বড় ধরনের একটা সহযোগিতা পাবে অনলাইনে পশু ক্রয়ের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী আইসিটিমুখী নীতির কারণে এবং প্রাইভেট পাবলিক সেক্টরকে যুক্ত করে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে দেশ উন্নয়নের বিভিন্ন ধারায় অগ্রগতি লাভ করেছে। প্রযুক্তির সুবিধায় সাধারণ মানুষের দৈনিন্দন জীবনকে বদলে দেয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।মোস্তফা জাব্বার বলেন, আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ এর ডিজিটাল সেবা কোরবানি গরু বিক্রি পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যে প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে পারে তার একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই ডিজিটাল গরু হাট।শম রেজাউল করীম বলেন, দেশে ৪১ কোটি গবাদিপশু রয়েছে এবং ১ কোটি ১৯ লক্ষ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। বিগত বছরের ন্যায় এবারো দেশের বাইরে থেকে গরু আমদানীর প্রয়োজন নেই। চামড়া সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য বিজ্ঞানসম্মত ও আধুনিক কসাইখানা তৈরীর উদ্যোগ নেবে সরকার।হাছান মাহমুদ বলেন, ই-কমার্স দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যেহেতু সরকারি বেসরকারি সক্ষমতা ও দক্ষতা একসাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। সেহেতু এখানে ক্রেতা বিক্রেতার জন্য নিরাপদ পদ্ধতি মনে হচ্ছে।জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল সেবার কারণে দেশ বদলে যাচ্ছে। ১০ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করছে। সারাদেশে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি জেলায় কোরবানী পশু বিক্রির প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে। সব প্লাটফর্মকে একই সূত্রে গেঁথে মানুষকে জানিয়ে দিতে হবে। তিনি ডিজিটাল কোরবানি হাটে অভিযোগ আসলে তা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা দেন।আতিকুল ইসলাম বলেন, অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। ক্রেতা ও বিক্রেতার আস্থা ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি গাইডলাইন তৈরী করে দিয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও একশপ এর মাধ্যমে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টাও অন্তভূক্ত করছি।ডিএনসিসির ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার গরু স্লটারিং সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দীন বলেন, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ধরন বদলে যাচ্ছে এটা ইতিবাচক দিক। করোনার এই দু:সময়ে ঘরে বসে কোরবানি পশু হাটে না গিয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করা জনসাধারণের জন্য এটি একটি আশীর্বাদ।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডব্লিওটিও সেল এর মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর আহমেদ জামাল।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর অধীনে এবারের ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। সহযোগিতায় রয়েছে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, এটুআই-একশপ।অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, গত বছর ৪৫জন মেম্বারসহ মোট ৬০ জন মার্চেন্ট এবং এবার ই-ক্যাব ও ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন মিলে ১০০এর বেশী মার্চেন্ট হাটে যুক্ত হয়েছে। গতবছর দেশব্যাপী ২৭ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এবার তা আরও অনেক বাড়বে বলে আমরা মনে করি।ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, কোরবানীর ব্যাপারে ধর্মীয় স্পর্শকাতরতা এবং ক্রেতার পছন্দকে গুরুত্ব দেয়া হবে। ডিজিটাল হাট-এ প্রদর্শিত পশুগুলো ডিজিটাল স্কেলএ ওজন দেয়া এবং এখান থেকে ক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে কোরবানির পশু ক্রয় করতে পারবেন।একশপের টিম লিড রেজওয়ানুল হক জামি বলেন, ডিজিটাল হাট এ স্ক্রো সেবা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে সাময়িক এস্ক্রো সেবা বিক্রেতা গ্রহণ করবে কিনা এটা তার ইচ্ছের উপর রাখা হয়েছে। ক্রেতারা চাইলে এস্ক্রোযুক্ত পশু ক্রয় করতে পারবে অথবা সরাসরি বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ করে মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।ডিজিটাল কোরবানির হাটে পশু কিনতে যেতে হবে এই ঠিকানায়।