বৃক্ষ রোপণে প্রধান মন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে ফতেয়াবাদ নার্সারি

বৃক্ষ রোপণে প্রধান মন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৯ মনোনীত হয়েছে চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদ নার্সারি।

‘ব্যক্তি মালিকানাধীন নার্সারী’ শ্রেণিতে দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদ নার্সারির প্রোপাইটর মোছাম্মৎ রুজিনা ইয়াছমিন মনোনীত হয়েছেন।

 

বৃক্ষরোপণ অভিযানকে টেকসই ও স্বতঃস্ফূর্ত কার্যক্রমে পরিণত করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুপ্রাণিত ও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৯’ প্রদানের জন্য ১৪ জন ব্যক্তি ও ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার।

রবিবার (৬ জুন) এই মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত পদক সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম, মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াপাউল হাসান, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রবিবার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— উপজেলা, জেলা, বিভাগ পর্যায়ে বিচারের পর জাতীয় কমিটি চূড়ান্তভাবে পদকপ্রাপ্তদের মনোনীত করে থাকে। জাতীয় কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনাক্রমে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়/উচ্চ বিদ্যালয়/এবতাদায়ি মাদ্রাসা/ সিনিয়র মাদ্রাসা’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।

পদকপ্রাপ্ত ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে— ধানদিয়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন, সাতক্ষীরার কাজী মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদী এবং শিয়ালী তালেমুন কুরআন নুরানি ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা পটুয়াখালী। ‘কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় যথাক্রমে— মৌকরণ বি, এল, পি ডিগ্রি কলেজ, মৌকরণ, পটুয়াখালী, আছমতআলী খান কলেজ, লাউকাঠী, পটুয়াখালী এবং আলহাজ মোল্লা জালাল উদ্দিন কলেজ, খুলনা। ‘ইউনিয়ন পরিষদ/উপজেলা পরিষদ/জেলা পরিষদ/পৌরসভা/সিটি করপোরেশন’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে— উপজেলা পরিষদ, রামপাল, বাগেরহাট এবং ঈশ্বরদী পৌরসভা, পাবনা মনোনীত হয়। ‘অধিদফতর/পরিদফতর/সেক্টর করপোরেশন/প্রতিষ্ঠান’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে আর.আর.এফ, খুলনা, বাংলাদেশ পানি উন্নয় বোর্ড, পটুয়াখালী এবং কেরানীগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ইটাভাড়া, ঢাকা মনোনীত হয়। এনজিও/ক্লাব/স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে বনায়ন, জগতি, কুষ্টিয়া এবং বাংলাদেশ স্কাউটস, পঞ্চগড় মনোনীত হয়েছে। ‘বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত বাগান’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে সামাজিক বন বিভাগ, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর, সামাজিক বন বিভাগ, যশোর (এসএফএনটিসি) সাতক্ষীরা এবং কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগ, কচ্ছপিয়া বিট, বাঘখালী রেঞ্জ মনোনীত করা হয়।

‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে— উনুচিং মারমা, খাগড়াছড়ি, পারভীন সিরাজ, মুন্সীগঞ্জ এবং তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে ইসাক আহমেদ, নাটোর এবং মো. মেহেদী হাসান কবির, বড়লেখা, মৌলভীবাজার মনোনীত হয়েছেন। ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন নার্সারি’ শ্রেণিতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে— উত্তরা ভাই ভাই নার্সারি, প্রোপ্রাইটার হেলেনা আক্তার হেনা, সাভার, ঢাকা, ফতেয়াবাদ নার্সারি, মালিক রুজিনা ইয়াসমিন, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম এবং তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে বৃক্ষবন্ধু নার্সারি, মালিক নিলু বেগম, মৌলভীবাজার এবং সততা নার্সারি, অঞ্জনা রানী পাল, খুলনা মনোনীত হয়েছেন।

‘বাড়ির ছাদে বাগান সৃজন’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য যথাক্রমে— নাহিদা বারিক, কলাবাগান, ঢাকা, রাখী দে, দিনাজপুর সদর এবং ওয়াহিদা ইয়াসমিন, বেতিয়াপাড়া রাজশাহী মনোনীত হয়েছেন। ‘বৃক্ষ গবেষণা/সংরক্ষণ/উদ্ভাবন’ শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য ড. মো. আব্দুল হাকিম মণ্ডল, রাজবাড়ী, মো. মোকাম্মেল হক খান, চট্টগ্রাম এবং হৃদয় চন্দন দেবনাথ, মৌলভীবাজার মনোনীত হয়েছেন।

সভাপতির বক্তব্যে বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার গত অর্থবছরে দেশে আট কোটির অধিক বৃক্ষরোপণ করেছে। এবারও আট কোটির ওপরে বৃক্ষরোপণ করা হবে। সরকারের পাশাপশি ব্যক্তি ও বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের এবারের প্রতিপাদ্য, ‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ বাস্তবে রূপ দিতে পারবো।’’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সম্মানীর পরিমাণ ভবিষতে বাড়ানো উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, বৃক্ষরোপণে যারা বিশেষ অবদান রাখেন তাদেরকে ১৯৯৩ সাল থেকে ‘ক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। প্রতিটি পুরস্কার প্রাপককে সনদপত্র ছাড়াও প্রথম স্থান অধিকারীকে ৩০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকে ২০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ১৫ হাজার টাকার অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেকে অর্থ প্রদান করা হয়।