‘নবায়নযোগ্য শক্তির ভবিষ্যৎ গড়তে দ্রুত নীতিমালায় সংস্কার জরুরি’

দেশের মানুষের জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য শক্তির ভবিষ্যৎ গড়ার বিকল্প নাই বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ। আর সেজন্য আইএসডিই বাংলাদেশের নেতৃত্বে এবং কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (CLEAN) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (BWGED)-এর সহযোগিতায় নাগরিক, জলবায়ু ও ভোক্তা অধিকার কর্মী এবং নীতিনির্ধারকরা একত্রিত হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানীর শক্তি গড়ে তোলা আহবান জানাচ্ছেন। বাংলাদেশের শতভাগ নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প নাই তাই নবায়নযোগ্য জ্বালানীর আন্দোলন চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী সামাজিক দাবিতে পরিনত হয়েছে। সেকারণেই বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির পথে বাধা গুলো বিশেষ করে পুরনো অবকাঠামো, জটিল অনুমোদন প্রক্রিয়া, উচ্চ বিনিয়োগ ঝুঁকি এবং নীতিমালার দ্রুত সংস্কারের দাবি তোলা হয়।

৩০ এপ্রিল(বুধবার) নগরীর চান্দগাঁও এ আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি জরুরি হয়ে উঠেছে, তাই কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতাগুলো এখনও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। ধীর প্রশাসনিক প্রক্রিয়া, অর্থায়নের অভাব, দুর্বল গ্রিড অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য প্রকল্পের জন্য অসম্পূর্ণ ট্যারিফ নীতি সংস্কার করে একটি সবুজ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সরকারী বেসরকারী উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি উঠেছে।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ” সবুজ ও ন্যায্য ভবিষ্যৎ গড়ার এই আন্দোলন চট্টগ্রামের সকলশ্রেণী পেশার মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন বাড়ছে। নীতিমালার সংস্কার শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত বিষয় নয়—এটি টেকসই জীবন জীবিকা, জলবায়ু সহনশীলতা এবং জাতীয় সমৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন এই আন্দোলনের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: নবায়নযোগ্য প্রকল্পের দ্রুত অনুমোদনের জন্য একক ভিত্তিক সেবা কেন্দ্র স্থাপন; স্মার্ট গ্রিড প্রযুক্তি এবং নেট এনার্জি মিটারিং (NEM) বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিড আধুনিকীকরণ; জাতীয় বিদ্যুৎ খাতের বাজেটে কমপক্ষে ২০% নবায়নযোগ্য শক্তির জন্য বরাদ্দ করা; দেশীয় ব্যাংকগুলোর জ্বালানি খাতের অর্থায়নের কমপক্ষে ২৫% নবায়নযোগ্য প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ; নবায়নযোগ্য প্রযুক্তির ওপর আমদানি শুল্ক কমানো এবং ট্যারিফ শর্ত বাতিল; এবং “বিদ্যুৎ নেই, বিল নেই” নীতি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

ফোরাম অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট চট্টগ্রামর সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “জলবায়ু ঝুঁকির সম্মুখভাগে থাকা আমাদের মতো কমিউনিটির জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি টিকে থাকার প্রধান হাতিয়ার। এখনই সময় বাধাগুলো দূর করে সত্যিকারের টেকসই বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাওয়ার।”

সারা দেশে গড়ে ওঠা ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামর এই শক্তিশালী দাবি বাংলাদেশের পরিচ্ছন্ন ও সহনশীল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলাকে আরও বেগবান করবে।

আইএসডিই বাংলাদেশের কর্মসূচি কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম, আলোচনা ও প্রচারাভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা অংশনেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেলস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন এর কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভাপতি সায়মা হক, ক্যাব সদরঘাটের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, সুবজের যাত্রা নির্বাহী পরিচালক সায়রা বেগম, অধিকার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওসমান জাহাঙ্গীর, চান্দগাঁও ল্যাবরেটরী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ইসমাইল ফারুকী, প্রাইম ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ আবু ইউনুচ, আইএসডিই বাংলাদেশের কর্মসুচি সমন্বয়কারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের প্রচার সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম, রায়হানুল ইসলাম, পার্থ সরকার, মোহাম্মদ হিববান ইসলাম প্রমুখ।