একটি অত্যাধুনিক গোয়েন্দা বা গুপ্তচর জাহাজ তৈরি করেছে ইরান।
জাহাজটি বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সামরিক মহড়াকালে সাগরে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি। সামরিক ক্ষেত্রে একের পর এক চমক দেখাচ্ছে তেহরান। তারই ধারাবাহিকতায় নজরদারি জাহাজ সামনে আনা হল।
জাহাজটি মূলত একটা নতুন ধরনের বা আধুনিক নৌযান। যা সম্পূর্ণরূপে ইরানের নৌবাহিনী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র শিল্প এবং প্রকৌশল কোম্পানিগুলোর বিশেষজ্ঞদের হাতে তৈরি হয়েছে। জাহাজটির নাম দেয়া হয়েছে ‘জাগরোস’।
ইরানের সামরিক বাহিনী দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর সুরক্ষার লক্ষ্যে দেশব্যাপী সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই মহড়ার মধ্যেই বুধবার নজরদারি জাহাজটি উন্মোচন করা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, ‘দেশের প্রথম গোয়েন্দা জাহাজ নৌবাহিনীর যুদ্ধ অভিযানে যুক্ত করা হয়েছে।’
ইরানে নির্মিত এই অত্যাধুনিক জাহাজটি ইলেকট্রনিক সেন্সর, ইন্টারসেপ্টর এবং সাইবার ও গোয়েন্দা প্রযুক্তিতে সজ্জিত। নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি বলেন, জাগরোস আমাদের নৌবাহিনীর চোখ হিসেবে গভীর সমুদ্র ও মহাসাগরে নজরদারি করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানি নৌবাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি। উদ্বোধনের পর তিনি বলেন, জাগরোস হবে ‘সমুদ্র ও মহাসাগরের গভীরে ইরানি নৌবাহিনীর সতর্ক দৃষ্টি’। তিনি আরও বলেন যে, এই জাহাজে সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
গাজা সংঘাতের জেরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ঘনঘটা বাজছে। ইসরাইল ও ইরানের মধ্যেও বেশ কয়েকবার হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ইরান সমর্থিত সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের সরকারের পতন হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান তার সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে। তারই অংশ হিসেবে গত মাসে একটি ড্রোনবাহী রণতরী উদ্বোধন করে তেহরান। এরপর গত সপ্তাহেই (১০ জানুয়ারি) একটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি উন্মোচন করে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে যার ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
এরপর চলতি সপ্তাহেই (১৩ জানুয়ারি) ইরানের সামরিক বাহিনীর বহরে নতুন করে আরও এক হাজার ড্রোন যুক্ত করা হয়। এগুলো মূলত দেশটির বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে। ড্রোনগুলো দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে গিয়ে বড় ধরনের আঘাত হানতে সক্ষম।
ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাডার ফাঁকি দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন প্রযুক্তির এসব ড্রোন নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে উড়তে পারে এবং দিকবদলও করতে পারে।