বিশাখাপত্তমে গ্যাস লিক, মোদির প্রার্থনা, রাহুলের শোক

বিশাখাপত্তমে রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিকের ঘটনায় সবার নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জরুরি বৈঠকে ডেকেছেন। মৃত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী শোক প্রকাশ করে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গ্যাস লিকের এই ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাজস্থানের মুুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
এতে আরো বলা হয়, গত রাত ৩টার দিকে একটি রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস লিক হয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে ৮ জন।
আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানা না গেলেও এক হৃদয় বিদারক ঘটনা সৃষ্টি হয় তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকায়। মানুষজনকে রাস্তায় রাস্তায় শ্বাসকষ্টে ভুগতে দেখা যায়। যে যেদিকে পারছেন ছুটছিলেন। বিক্ষিপ্তভাবে উদ্ধারে এগিয়ে গিয়েছেন আশপাশের লোকজন। ঘুমের ঘোরে যখন মানুষ, তখন সেই শেষ রাতে আকস্মিত গ্যাসের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে দম বন্ধ করা এক অবস্থার সৃষ্টি হয়।
সকালে এ খবর পেয়ে সবার নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করছেন নরেন্দ্র মোদি। উদ্ধার অভিযান পর্যালোচনার জন্য জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বৈঠক আহ্বান করেছেন তিনি। এ নিয়ে টুইটে এসব কথা বলেছেন মোদি। এর কয়েক মিনিট পরে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তিনি। এ ছাড়া তিনি অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগমোহন রেড্ডির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাকে জানিয়েছে দিয়েছেন প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা ও সমর্থন দেয়া হবে। সমবেদনা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনিও বলেছেন, বিশাখাপত্তমের ভাইজাগের এই ঘটনা হতাশাজনক। এ নিয়ে তিনিও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। অমিত শাহ বলেন, আমরা অব্যাহতভাবে ও নিবিড়ভাবে ঘটনা নজরদারি করছি। বিশাখাপত্তমের সব মানুষের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।
ওদিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এমপি টুইটে শোক জানিয়েছেন। তিনি ওই অঞ্চলে দলীয় সব নেতাকর্মীদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়ে টুইটে লিখেছেন, ভাইজাগে গ্যাস লিক হওয়ার খবর শুনে আমি শোকাহত। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও সমর্থন দেযার জন্য ওই অঞ্চলের কংগ্রেস নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যারা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
ওই কারখানাটি দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যাটারি প্রস্তুতকারক এলজি কেমিকেল লিমিটেড বলেছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। যারা এই গ্যাস লিকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তাদের দ্রুত চিকিৎসার সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, গ্যাস লিকের প্রকৃত কারণ ও মৃত্যুর বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। উল্লেখ্য, এই কারখানাটি ১৯৬১ সালে হিন্দুস্তান পলিমার্স নামে পরিতিষ্ঠিত হয়। এর মালিক দক্ষিণ কোরিয়ার এলজি কেমিক্যাল । পরে ১৯৯৭ সালে এর নাম দেয়া হয় এলজি পলিমার্স ইন্ডিয়া। এখানে বিভিন্ন রকম পলিস্টার প্লাস্টিক তৈরি করা হয়, যা দিয়ে খেলনা ও নানা রকম পণ্য তৈরি করা হয়।