শুভ জন্মদিন মীর মশাররফ হোসেন

মীর মশাররফ হোসেন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল, মুসলিম সাহিত্যিক ও কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’র রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী বুধবার (১৩ নভেম্বর)।

মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার গৌরী নদীর তীরে লাহিনীপাড়ায় নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মীর মোয়াজ্জেম হোসেন এবং মাতার নাম দৌলতন নেছা। তিনি ১৯১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে পৈত্রিক নিবাসে মারা যান। পদমদীতেই তাকে সমাহিত করা হয়। তার স্মৃতি রক্ষার্থে পদমদীতে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।

১৭৭ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মীরের সমাধিস্থল পদমদীতে বুধবার উপজেলা প্রশাসন, বাংলা একাডেমি, মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যে পরিষদ, মীর মশাররফ হোসেন কলেজ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসিবুল হাসান জানান, সাহিত্য সম্রাট মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিস্থলে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজ, মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও দিবসটিকে ঘিরে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করবে।

শ্রদ্ধাঞ্জলি ও দোয়া শেষে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহা. নায়েব আলী, প্রবন্ধ পাঠ করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর।

এছাড়াও মীর মশাররফ হোসেন সম্পর্কে আলোচনা করবেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল ফজল, রাজবাড়ী মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি সালাম তাসির, বালিয়াকান্দি মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি মুন্সী আমির আলী এবং স্বাগত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হাসিবুল হাসান।

উল্লেখ্য, মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন মুসলিম বাংলা সাহিত্যের অমর অগ্রপথিক। তার আগে কোনও মুসলিম সাহিত্যিক সাহিত্য ক্ষেত্রে এতোটা অগ্রসর হননি। বাংলার মুসলমান সমাজের দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর জড়তা দূর করে আধুনিক ধারায় ও রীতিতে সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত ঘটে তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে। তার সৃষ্টি কর্ম বাংলার মুসলমান সমাজে আধুনিক সাহিত্য ধারার সূচনা করে। তিনি সাহিত্যের সকল শাখায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। এদিক থেকে তিনি মুসলিম জাগরণের পথিকৃৎ।

তার লেখা উপন্যাস ‘উদাসী পথিকের মনের কথা’ (১৮৯০), ‘গাজী মিয়ার বস্তানী’, ‘জমিদার দর্পণ’ ‘জমিদার দর্পণ’ (১৮৭৩), আত্মকাহিনীমূলক রচনাবলী ‘আমার জীবনী’, ‘বিবি কুলসুম’ (১৯১০) সহ বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ ও ধর্মবিষয়ক ৩৭ টি বই বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি।