ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই: ড. মাসুদ

ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, তাই শিগগিরই ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে একটি কনভেনশন সেন্টারে ঢাকাস্থ গোবিন্দগঞ্জ উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তিনি।

ড. মাসুদ বলেন, যারা (আওয়ামী লীগ) চেয়েছে বাংলাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করে দিয়ে ইসলামী আন্দোলন নস্যাৎ করে দিতে, আজ তারাই বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত আর নিষিদ্ধ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীকে শেষ করা যায়নি, যাবে না। কারণ, জামায়াতে ইসলামী যেই আদর্শ প্রতিষ্ঠায় কাজ করে, সেই আদর্শ মহান রবের মনোনীত।

তিনি বলেন, ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ইসলামবিদ্বেষীরা বিরোধী সৃষ্টির বহু অপচেষ্টা করেছে। এখনও কেউ কেউ বিরোধ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। তাই অতি শিগগিরই ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক উপপরিচালক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গাইবান্ধা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ডা. আব্দুর রহিম সরকার।

অন্যদিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হল রুমে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ও ধানমন্ডি জোন পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিনের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ও ধানমন্ডি জোন সহকারী পরিচালক মো. আবদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবির কর্মশালায় ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, পৃথিবীর কোনো বিপ্লব সংবিধান মেনে হয়নি, হয় না। বাংলাদেশেও জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত বিপ্লব সংবিধান মেনে হয়নি। বিদ্যমান সংবিধানে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন না হলেই জনগণ বিপ্লবের মাধ্যমে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটায়। বিপ্লবের মাধ্যমে কোনো সরকার পদত্যাগ করে না, বরং ক্ষমতাচ্যুত হয়। পদত্যাগ সংবিধান মেনে হয় কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত সংবিধান মেনে হয় না, বিপ্লবের মাধ্যমে হয়।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের এ সদস্য বলেন, শেখ হাসিনার তৈরি নিষিদ্ধ সংগঠন আইনে রাষ্ট্রপতির আদেশে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খবর প্রচার হলে দেশের জনগণ আনন্দ মিছিল এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। দেরিতে হলেও রাষ্ট্রপতি দেশের জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পেরেই সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তার শরিক ১৪ দলের মতামতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই প্রজ্ঞাপন জনগণ ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলেছে; বরং জনগণ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশছাড়া করেছে। ক্ষমতা হারিয়ে আওয়ামী লীগ দিশাহারা হয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। প্রশাসনে আওয়ামী লীগের দোসরদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সরকারকে সতর্ক ও কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।

ড. মাসুদ উপস্থিত অগ্রসর কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জামায়াতে ইসলামী করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে নামাজ, রোজা, জাকাত, হজ্জ পালনের মতোই দীন কায়েমের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা আল্লাহর ফরজ বিধান। এই ফরজ বিধান অমান্য করার কোনো সুযোগ নেই। জামায়াতে ইসলামী দীন কায়েমের আন্দোলন করছে। মহান আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ঘোষণা দিয়েছেন, মুমিনদের মধ্যে শপথবদ্ধের জন্য জান্নাত রয়েছে। তাই শুধু মুমিন হলে হবে না, শপথবদ্ধ হতে হবে। তিনি বাংলার জমিনে আল্লাহ দীন কায়েমের মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করতে উপস্থিত কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।