কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত তিন কৃষকের একজনকে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। বাকি দুইজনের জন্য ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
নিহত কৃষক মিনাবাজার মৌলভী আবুল কাছিমের ছেলে আক্তারুল্লাহ (২৪)। ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ মে) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্প (২২ নম্বর) উনছিপ্রাং পুটিবনিয়ার পশ্চিমে ছনখোলা থেকে ওই কৃষকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে একদল পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
জানা গেছে, বুধবার (২৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মিনাবাজার শামসু হ্যাডম্যানের ঘোনা থেকে ৬ জন কৃষক ধানক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় সশস্ত্র একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী তাদের অপহরণ করে। অপহৃতরা হলেন, কৃষক আবুল হাশেম ও তার দুই পুত্র জামাল এবং রিয়াজুদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র শাহেদ (২৫), মৌলভী আবুল কাছিমের পুত্র আক্তারুল্লাহ (২৪) ও মৃত মোহাম্মদ কাশেমের পুত্র ইদ্রিস।
সেখান থেকে চাল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর বিনিময়ে হাসেমসহ তার দুইপুত্রকে ছেড়ে দিলেও বাকি তিন জনকে ছেড়ে দেয়নি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। অপহৃত শাহেদের মোবাইল থেকে তার পরিবারের নিকট ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। অন্যথায় তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এরই প্রেক্ষিতে শুক্রবার (১ মে) সকালে এক কৃষককে মাথায় গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে পরিবার পরিজনকে খবর দেয় রোহিঙ্গা সন্ত্রসীরা। মৃতদেহের শরীর থেকে একটি চিরকুট ও ঘটনাস্থল থেকে খালি কার্তুজ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। বাকি দুই কৃষককে জীবিত পেতে হলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুখ্যাত হাকিম ডাকাত তাদের অপহরণ করেছে।
অপহৃত শাহেদের মুঠোফোনের বরাত দিয়ে শামসুদ্দিন হ্যাডম্যান বলেন, ‘শাহেদ ভোর রাতে মুঠোফোনে তার মার কাছে জানান, আক্তারুল্লাহকে মেরে ফেলেছে হাকিম ডাকাত। ২০ লাখ টাকা না দিলে তাদেরও দু’য়েকদিনের মধ্যে মেরে ফেলা হবে।’
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের পশ্চিম পাশে ছনখোলা হতে আক্তারুল্লাহ মৃত দেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশ। এর আগের দিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় ছয় ব্যক্তিকে অপহরণ করে। পরে কৌশলে তিনজন ফিরে এলেও বাকিদের মুক্তিপণ ছাড়া ছেড়ে দেয়নি।