ভ্রমণের দোয়া

দোয়াও একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া ইবাদতের মূল। দোয়া ছাড়া ইবাদত অস্পূর্ণ থাকে। যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল সা. আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া শিখিয়েছেন।

قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ – إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ – قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

উচ্চারণ: কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন, ইযাজা আনাস রুল্লহি অল ফাতহ, কুলহু আল্লাহু আহাদ, কুল আউজু বিরব্বিল ফালাক্ব, কুল আউজুযু বিরব্বিন নাস।

অর্থ: হযরত জুবায়ের ইবনে মুতঈম রা. বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলিলেন, হে জুবায়ের ! তুমি কি উহা পছন্দ কর যে, যখন তুমি সফরে যাও তখন তোমার অবস্থা তোমার সব সঙ্গীর অপেক্ষা উত্তম ও তোমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা বেশি হয়?

আমি বলিলাম, জি হ্যাঁ । আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক ! রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এই পাঁচটি সুরা পাঠ করবে– قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ – إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ – قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ – قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ

প্রত্যেক সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম পড়বে। সবশেষে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়বে । এইভাবে পাঁচ সুরা ও ছয়বার বিসমিল্লাহ হবে।

হযরত জুবায়ের রা. বলেন, আমি ধনী হওয়া সত্ত্বেও পূর্বে যখন সফরে যেতাম তখন আমার অবস্থা সর্বাপেক্ষা ভগ্নাবস্থা ও আমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা কম হতো।

কিন্তু রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে এই সুরাগুলো শিক্ষা দিলেন তখন থেকে আমি এ সুরাগুলো পাঠ করতে আরম্ভ করলাম, আর তখন থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সম্পূর্ণ সফরে আমার অবস্থা সর্বাপেক্ষা উত্তম হতে লাগল। আমার পাথেয় সর্বাপেক্ষা বেশি হতে লাগল।

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি ৬৩৪০)

হাদিসে এসেছে, হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি)

রসুল সা. বলেছেন, যদি কেউ চায় যে বিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোক, তাহলে সে যেন সুখের দিনগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করে (তিরমিজি ৩৩৮২)

হযরত সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (সহিহাহ ১৫৪, তিরমিজি ২১৩৯)