যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় রাজ্য ফ্লোরিডা ও জর্জিয়ায় হারিকেন হেলেনের তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা শতক ছাড়িয়েছে। এই সংখ্যাটা ৬০০ ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন কয়েক লাখ মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লিজ শেরউড-র্যান্ডওয়েল জানান, দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের উদ্ধারকর্মীরা এ পর্যন্ত উত্তর ক্যারোলাইনা থেকে ৩৯ জন, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা থেকে ২৫ জন, জর্জিয়া থেকে ১৭ জন, ফ্লোরিডা থেকে ১৪ জন, টেনেসি থেকে ৪ জন এবং ভার্জিনিয়া থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেন। তবে আমাদের আশঙ্কা মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে যেতে পেরে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে শক্তিশালী হারিকেনটি ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানে। বিগ বেন্ড এলাকায় ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে ৪ ক্যাটাগরির এই হারিকেন। হেলেন এই অঞ্চলের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালানো হারিকেন।
ফ্লোরিডার পর এটি জর্জিয়া, টেনেসি, ভার্জিনিয়া ও দুই ক্যারোলাইনার দিকে অগ্রসর হয়। এর প্রভাবে অঙ্গরাজ্যগুলোর বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হয়। হারিকেনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নর্থ ক্যারোলাইনা। অঙ্গরাজ্যটির কেবল একটি কাউন্টিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৯ জনের। বানকম্ব নামের ওই কাউন্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হেলেনের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্লোরিডার স্টেইনহ্যাচি শহর। ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসসহ হারিকেন হেলেন প্রায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে এসে এই শহরে আঘাত হানে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক দ্য এক্সপ্রেস জানিয়েছে, হারিকেন হেলেনের শক্তিমত্তা এতটাই বেশি ছিল যে, স্টেইনহ্যাচি শহরটি মানচিত্র থেকে প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে!
নর্থ ক্যারোলাইনার গভর্নর রয় কুপার বলেছেন, পাহাড়ি শহর অ্যাশভিলের শত শত রাস্তা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের জন্য আকাশপথে রসদ সরবরাহ করা হচ্ছে। পানিবন্দিদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে বোট ও হেলিকপ্টার।
জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প বলেন, ‘ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি দেখে মনে হচ্ছে এখানে ‘বোমা বিস্ফোরিত’ হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় হেলনকে ভয়াবহ বিধ্বংসী উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমার জীবনে আমি এমন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় খুব কম দেখেছি। নিখোঁজদের অনুসন্ধান এবং উপদ্রুতদের মধ্যে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা সর্বাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।’