পেকুয়ায় ১৫টন চাল গায়েব চেয়ারম্যান বরখাস্ত, মামলা দায়ের

 পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধি
ত্রাণের ১৫ টন চাল আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়ন পরিষদ  চেয়ারম্যান ও টইটং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারান সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে আজ দুপুরে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সরকারী প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজার জেলার টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন আইনানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
উল্লেখিত চেয়ারম্যান  কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ মূলক কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচিন নয় মর্মে সরকার মনে করে। কাজেই স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাকে স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
একই সময় কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা  হয়।
অপরদিকে ১৫ টন ত্রাণের চাল আত্মসাতের অভিযোগে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গতকাল ২৮ এপ্রিল রাতে পেকুয়া  উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলাও দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ৪/২০ইং। মামলার পর থেকে চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছে।
পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আমিনুল ইসলাম বলেন, হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য ১৫টন চাল প্রকল্পের চেয়ারম্যান হিসাবে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী চকরিয়া খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেছেন। গত ৬ এপ্রিল চালগুলো উত্তোলন করা হলেও তিনি মাষ্টাররোলসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেননি। চালগুলো কোথায় আছে সে বিষয়েও কোন সুরহা দেননি। যার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই মানবিক সহায়তা হিসেবে ৪০ মেট্রিক টন চাল পেকুয়া উপজেলার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ২৫ টন চাল বিলি করা হয়েছে।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর, রিকশাচালক ও অসহায় দুঃস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য গত ৩১ মার্চ টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী অনুকূলে ১৫ টন চাল উপ বরাদ্দ দেওয়া হয়। আর তিনি চালগুলো উত্তোলন করে এলাকায় বিতরণ না করে চকরিয়ার এক ডিলারের কাছে পানির দরে বিক্রি করে দিয়েছেন।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় সরকারি বরাদ্দের ১৫ টন চাল আত্মসাত পূর্বক কালোবাজারে বিক্রির  অভিযোগে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) রাতে মামলাটি রুজু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মামলা করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য ১৫টন চাল প্রকল্পের চেয়ারম্যান হিসাবে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেছেন। গত ৬এপ্রিল চালগুলো উত্তোলন করা হলেও তিনি মাষ্টাররোলসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেননি। চালগুলো কোথায় আছে সে বিষয়েও কোন সুরহা দেননি। যার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সূত্রে আরও জানাযায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই মানবিক সহায়তা হিসেবে ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ২৫ টন চাল বিলি করা হয়েছে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দিনমজুর, রিকশাচালক ও অসহায় দুঃস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য গত ৩১ মার্চ টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী অনুকূলে ১৫ টন চাল উপ বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাত স্বাক্ষরিত ওই বরাদ্দকৃত চালের কোন হদিস মেলেনি এখনো।
ত্রাণের চাল গায়েবের বিষয়টি তদন্ত করতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার পেকুয়ায় গিয়েছিলেন।
তদন্তের বিষয়ে তিনি জানিয়েছিলে, পেকুয়ায় তদন্তে এসে সরকারী ভাবে বরাদ্দের কাগজ বা নথি পর্যালোচনা করেছেন। টৈটং চেয়ারম্যান দুই দফায় চাল উত্তোলন করেছেন। কিন্তু তিনি বিতরণের কোন তথ্য দেননি বা চাল গুলো কি করেছেন সে বিষয়ে এখনো কিছু জানানি।
তিনি আরও বলেন, টৈটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তার সাথে কথা বলা যায়নি। চালের বিষয়ে এখন তিনি জানবেন। বাকিরা যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের নথি পেয়েছি। এখন চেয়ারম্যানেই বলতে পারবেন চাল কোথায় আছে।