আজ জব্বারের বলী খেলা

মির্জা ইমতিয়াজ শাওন:: আজ বৃহস্পতিবার আবদুল জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর বসবে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে। শতবর্ষী বলীখেলাকে ঘিরে চট্টগ্রামে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবের আমেজ। বলী খেলায় অংশ নিতে প্রতি বছরের মতো এবারও আগ্রহীরা আয়োজক কমিটির কাছে নাম জমা দিয়েছেন। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত আগ্রহীদের নাম গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে শতাধিক বলী নাম জমা দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বলী খেলার মূল আসর হলেও মেলা শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার। বুধবার দুপুর থেকে মেলায় ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যায় প্রচুর ভিড় দেখা যায় মেলায়। লালদীঘি ময়দানসহ আশপাশজুড়েই বসেছে বৈশাখী মেলা। অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের এ সময় জব্বারের বলী খেলার আয়োজন করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে। কেউ বলেছেন, খেলার আয়োজন ও মেলা অব্যাহত থাকুক। আবার কেউ মন্তব্য করেছেন স্থগিত করা হোক কিংবা সবাইকে বিজয়ী ঘোষণা করা হোক।

আয়োজক কমিটি পক্ষে কমিটির সহ-সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ নিশ্চিত করেছেন বৃহস্পতিবার সাড়ে ৪টায় বলী খেলা হবে।

আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে বলী খেলার মূল আসরের সময় এক ঘণ্টা পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বলী খেলা বেলা সাড়ে ৩টায় হওয়ার কথা থাকলেও হবে সাড়ে ৪টায়। ওই সময় তাপপ্রবাহ কমবে।তিনি জানান, বিকেলে তাপপ্রবাহ কিছুটা কমলে সাড়ে ৪টার দিকে লালদীঘির ময়দানে বালুর মঞ্চেই বলী খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে শতাধিক বলী নাম জমা দিয়েছেন।

নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় থেকে লালদীঘি পারের পুরো এলাকায় পসরা সাজিয়েছেন। বৈশাখী মেলার পরিসর শুরু হয়েছে নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় থেকে। এরপর সেটা বক্সিরহাট বিট, লালদীঘির চারপাশ, কেসেদে রোড, জেলা পরিষদ চত্বর হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা ছড়িয়ে গেছে। প্রখর রোদ আর গরম উপেক্ষা করে যাচ্ছেন ক্রেতারাও কেনাকাটায় মেতেছেন। মানুষের প্রচুর ভিড়। নানা ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এসেছেন মেলায়। বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র, ঝাড়ু, ঝাটা, মাদুর, পাটি, পাখা, পাপোশ, কুলা, ঢালা, মোড়া, হরেক রকমের ঘর সাজানো কারুপণ্য, নানা ধরনের টব, শিশুদের খেলনা, হাড়ি-পাতিল, দা-বটি-খুন্তি, সাজের গয়না, বিভিন্ন গাছের চারাসহ নানারকম জিনিসপত্র নিয়ে বসেছেন। প্রচণ্ড গরমে হাত পাখার বিক্রিও চলছে বেশ। মেলায় গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন লোকজ শিল্পের পাশাপাশি গৃহস্থালি পণ্য থেকে শিশুদের খেলনা, দা, ছুরি ও বঁটিসহ নানা ধরনের পণ্য মিলছে।

মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর যথাসময়ে মেলা ও খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তাপপ্রবাহের কারণে খেলা অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা হবে না।

এবারের বলী খেলার স্পন্সর প্রতিষ্ঠান মঈন এগ্রো ফার্ম ও এনএইচটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানসির জানান, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের তরুণদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলী খেলা। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শতবর্ষী এ খেলার সাথে চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িত। আছে আবেগও ভালোবাসার জায়গা একারনেই এর সাথে আমরা যুক্ত হয়েছি বেশ ভালো লাগছে। এ আয়োজন চলুক চিরকাল।