চট্টগ্রামে বেসরকারি খাতের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছে চিকিৎসকরা

চিকিৎসক মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেবা বন্ধ রেখেছে চিকিৎসকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে চিকিৎসা বা বিভিন্ন টেস্ট করতে আসা রোগীরা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের সেবা বন্ধ রাখে প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা গত ১৮ এপ্রিল এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

এদিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখায় স্থবির পড়েছে চট্টগ্রামে বেসরকারি খাতের চিকিৎসা সেবা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নগরের হাসপাতাল- ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগী আসলেও কোনো চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। এছাড়া কোনো ধরনের টেস্টও করতে পাছেন না ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সেবা না নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে রোগীদের।

কিডনী সমস্যা নিয়ে কক্সবাজার থেকে চিকিৎসা নিতে আসা দিদারুল আলম নামে এক রোগী জানান, গতকাল (সোমবার) ডাক্তার দেখানোর পর একটা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ করাতে এসে শুনি টেস্ট বন্ধ। আজকে টেস্ট করাতে পারলে কক্সবাজার চলে যেতে পারতাম। কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে একদিন থাকতে হবে চট্টগ্রামে।

এপিক হেলথ কেয়ারের ম্যানেজার (মেডিক্যাল সার্ভিসেস) ডা. হামিদ হোসেন আজাদ বলেন, আমরা বিএমএর কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমাদের সেবা বন্ধ রেখেছে। কর্মসূচি শেষ হলে আমাদের সেবা পুনরায় চালু হবে।

ন্যাশনাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, আমাদের হাসপাতালে যে রোগী ভর্তি আছে তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নতুন রোগী ভর্তি বা কোনো টেস্ট করানো হচ্ছে না। পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিসও বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, আমাদের সহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় আমার কর্মসূচির ঘোষণা করেছি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। তবে জরুরি চিকিৎসা সেবা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেরি করার অভিযোগে ডা. রক্তিম দাশকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ১১ এপ্রিল রাতে হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক এস এইচ খাদেমী বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সৈয়দসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এছাড়া গত ১৪ এপ্রিল নগরের বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যুর পর রিয়াজ উদ্দিন শিবলু নামে এক চিকিৎসককে মারধর করে রোগীর স্বজনেরা। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় একজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭–৮ জনকে আসামি করা হয়।