ফটিকছড়িতে পৌষ মেলায় মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

শওকত হোসেন করিম, ফটিকছড়ি:
বাঙালি জীবনের সংস্কৃতির ধারাকে বহমান রাখে মেলা। এর মাধ্যমে শিল্পীরা সুযোগ পায় নিজদের মেলে ধরার; আর তাই বহমান থাকে লোকসংস্কৃতি। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বারোমাসিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪ দিনব্যাপী পৌষ মেলা। তৌহিদুল আনোয়ার হাই স্কুল আয়োজিত গত ১৫ জনুয়ারি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা মেলার উদ্বোধন করেন। মেলাটি চলবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। শেষ দিনে থাকবে হাইভোল্টেজ জব্বর বলি খেলা।
সেখানে দেশের ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পণ্য নিয়ে হাজির হন কয়েক শ বিক্রেতা। কী নেই এ মেলায়! কসমেটিক, জুয়েলারি, শখের হাঁড়ি, মাটির সরা, ফুল, শোলার ফুল, মাটির পুতুল, কাঠের একতারা, বাঁশের বাঁশি, নকশিকাঁথা, বাঁশ ও বেতের সামগ্রী, মোয়া, মুড়কি, বাতাসা বা মিষ্টি। ছিল গ্রামীণ ঐতিহ্যের নাগরদোলা।
এ মেলা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘গ্রাম্য উৎসব’ নামেও পরিচিত। মেলাটি বসছে ২ বছর ধরে। আশপাশের নানা জায়গা থেকে মেলায় ভিড় করেন কয়েক হাজার মানুষ।
কুমিল্লা থেকে আসা মোঃ মোস্তফা তার দোকানে রয়েছে পুদিনা পাতার রং চা, মালাই চা, আগুনের চা ও তন্দুরি চা। তিনি বলেন, ‘২০ বছর ধরে এই ব্যবসার সাথে জড়িত আছি। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ব্যবসা নিয়ে মেলাতে অংশগ্রহণ করি। নিজের তৈরি চা বিক্রি করছি। ৪ দিন ধরে থাকবো এ মেলায়। সকাল থেকে মেলা শুরু হয়। চলে রাত পর্যন্ত। তবে দুপুরের পর মেলায় লোকসমাগম বাড়তে থাকে।’
মেলায় এসেছেন ভূতের বাড়ি নামের জাল চানাচুর ব্যবসায়ী। তিনি আমাদেরকে জানাই আগামীকাল ভূতের পোশাক ব্যবহার করে আরো মজা করে জাল চানাচুর বিক্রি করবেন।
হারুয়ালছড়ি নয়াহাট বাজারের ব্যবসায়ী রবিউল হোসেন মিঠু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মেলা খুব প্রিয় । তবে শীতকালীন মেলা কিংবা ওরশে মেলা হয়ে থাকে। মেলায় এসে ভালো লাগছে। মেলা ঘুরে ঘুরে দেখছি। পছন্দের খাবার কিনে খাচ্ছি।’
এমদাদ হোসেন বলেন,‘ মেলায় সব ধর্মের মানুষ আসেন। মেলায় বেশি আসেন নারীরা। মেলা থেকে আমার মেয়ে জন্য একটি খেলনা কিনেছি।’
ছাত্রনেতা রিয়াজ মো: নূরুল রাব্বি জানাই দূর দুরান্ত থেকে এ মেলা দেখতে আসে অনেক লোক। মেলায় আগত মানুষের মন কেড়ে নিচ্ছে ভান্ডারী গান, বাউল গান, আধুনিক গান ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। দিনের বেলায় মানুষ কম থাকলেও সন্ধ্যার সাথে সাথে মেলায় মানুষের ভিড় বেড়ে যায়।