সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষণ রোধে মানববন্ধন

পটিয়া উপজেলার সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষণ রোধে কারখানার বর্জ্য নিষ্কাসন খালে বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত ৫ জুলাই শুক্রবার বিকালে পটিয়া উপজেলার শাহগদী মার্কেট চত্বরে ক্লিন বাংলাদেশ ও এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণের আয়োজনে সার্জেন্ট মহি আলম খালের দূষণ রোধে কারখানার বর্জ্য নিষ্কাসন খালে বন্ধের দাবীতে আরকান সড়কে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ক্লিন বাংলাদেশের সভাপতি ও দৈনিক দেশ বার্তা সম্পাদক লায়ন মোহাম্মদ আবু ছালেহ্, রেজা মোঃ জামশেদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল মন্নান চৌধুরী, নুরুল আবছার, সম্রাট খাঁন, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক হাজী জসিম উদ্দিন, আবুল মনসুর শরীফ, বদিউল আলম, আবদুস সালাম, মফিজ উদ্দিন, রণি খাঁন প্রমুখ। বক্তারা বলেন পটিয়ায় কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে বোরো চাষ হয়না প্রায় ৮ বছর ধরে, বেশ কয়েকটি শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়ে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তাছাড়া দূষিত পানির কারণে তিন শতাধিক একর ধানি জমিতে বোরো চাষাবাদ বন্ধ হয়ে পড়েছে। পরিকল্পিতভাবে উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের শহীদ সার্জেন্ট মহি আলম খালের পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়া এখনো বন্ধ হয়নি। বিষাক্ত বর্জ্য খালে পড়ে পানি দূষিত করে তুললেও পরিবেশ অধিদপ্তর অজানা কারণে নীরব। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে উপজেলার শহীদ সার্জেন্ট মহি আলম খালে বিভিন্ন কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পড়ে দূষিত ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। জোয়ার-ভাটার এই খালটির সঙ্গে চাঁনখালী, বোয়ালখালী খাল ও কর্তফুলী নদীর সংযোগ রয়েছে। ফলে জোয়ার ও ভাটার সময় কর্তফুলী নদীতেও বিষাক্ত বর্জ্য পতিত হচ্ছে। দূষিত পানির কারণে খালে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সার্জেন্ট মহি আলম খালের পানি বিষাক্ত নীল ও কালচে রং ধারণ করছে ও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। খালের আশপাশের বাড়িঘর, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও বহু মসজিদের মুসল্লিরা নামাজ পর্যন্ত আদায় করতে পারছেন না। খালের পাশ দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের প্রতিদিন শত শত যাত্রীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিষাক্ত পানির দুর্গন্ধে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্বে পটিয়া উপজেলার আমজুর হাট মোড় থেকে শুরু করে মনসা বাদামতল এলাকার প্রায় ১৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ সার্জেন্ট মহি আলম খাল। এই খালের পানি দিয়ে উপজেলার উজিরপুর, নাইখাইন, গৈড়লা, লড়িহরা, দক্ষিণ হুলাইন, এয়াকুবন্ডী, তিয়ারকুল, পৌর এলাকার উজিরপুর, উনাইনপুরা ও পৌরসভার আল্লাই এলাকার কয়েকশ’ কৃষক ধানিজমিতে প্রতি মৌসুমে চাষাবাদ করে থাকেন। শাহ আমানত নিটিং এ্যান্ড ডাইং ও জঙ্গলখাইন কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে গড়ে ওঠা ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টসের বিষাক্ত বর্জ্য খালে ছেড়ে দেয়ার কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ও চাষাবাদ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এলাকার কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খালের পানি পরীক্ষা করে দূষিত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতে এই খালের পানিতে এসিডিটির মাত্রা ৪.২ পাওয়া গেছে। সাধারণত পানিতে ৬.৫ থেকে ৭ পর্যন্ত এসিডিটির মাত্রা থাকে। খালের এই পানি দিয়ে বোরো চাষাবাদ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন যারা এই রুট দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যান তাঁরা গৈড়লার মোড় থেকে বাদামতল এলাকা পর্যন্ত বাজে দুর্গন্ধ থেকে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এই দুর্গন্ধ বন্ধ করার জন্য মনে হয় কেউ নেই। অনতিবিলম্বে কারখানার বর্জ্য নিষ্কাসন খালে বন্ধের দাবী জানান। যদি তা করা না হয় তাহলে আগামী বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ ব্যাপারে পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও হুইপ আলহাজ্ব সামশুল হক চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।