নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান! প্রেসিডেন্ট আটক, জরুরি অবস্থা, সীমান্ত বন্ধ

সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে আফ্রিকার দেশ নাইজারে। সেখানকার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে সেনাবাহিনী। এরপর তারা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দখলে নিয়ে এ ঘোষণা দিয়েছে। বলা হয়েছে, ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। টালমাটাল পরিস্থিতিতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সীমান্ত। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে কারফিউ। সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে যেকোনো বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে। বুধবার রাজধানী নিয়ামেইয়ে থেকে টেলিভিশনে প্রচারিত ঘোষণায় এ কথা জানানো হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এতে বলা হয়, এর আগে একই দিন মোহাম্মদ বাজোমকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বন্দি করা হয়।

তাকে বন্দি করেন প্রেসিডেন্ট গার্ডের সদস্যরাই। তবে মোহাম্মদ বাজোমের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দেন কর্নেল মেজর আমাদোউ আবদ্রামানে। ঘোষণায় তিনি বলেন, আপনারা যে শাসনের সঙ্গে এতদিন ধরে পরিচিত, তার ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী। তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান অব্যবস্থাপনার কারণে এই অভ্যুত্থানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার সামরিক অভ্যুত্থানের এই ঘোষণা পড়ে শোনান কর্নেল মেজর আমাদোউ আবদ্রামানে। এ সময় টিভির পর্দায় তার পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ৯ সেনা কর্মকর্তাকে। জানানো হয়, দেশের সুরক্ষার জন্য গঠন করা হয়েছে জাতীয় কাউন্সিল। সেই কাউন্সিলের সদস্য ওই ৯ সেনা কর্মকর্তা।
সরাসরি একে সামরিক অভ্যুত্থান বলে সেনারা ঘোষণা না দিলেও কার্যত এটা অভ্যুত্থান। ২০২০ সালের পর এটা পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে ষষ্ঠ অভ্যুত্থান। বুধবার এ খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে উদ্বেগ দেখা দেয়। নাগরিকদের মধ্যে নানা রকম আলোচনা শোনা যায়। উদ্বেগ দেখা দেয় প্রেসিডেন্টের পরিণতি নিয়ে। তাকে তার সহযোদ্ধারা বন্দি করলেও কোথায়, কি অবস্থায় রাখা হয়েছে- সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। ফলে নানা শঙ্কা ভর করছে। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট আছে, তাতে বলা হয়েছে- প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবার ভাল আছেন। এসব একাউন্ট কারা নিয়ন্ত্রণ করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠার পর এসব বিবৃতি সেখান থেকে মুছে ফেলা হয়।

পশ্চিম আফ্রিকার প্রধান আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক জোট ‘ইকোয়াস’ বলেছে, সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার খবরে তারা উদ্বিগ্ন। এ ঘটনায় জড়িত ‘বিশ্বাসঘাতক’ সেনাদের অবিলম্বে এমন কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন। মোহাম্মদ বাজোমের অবিলম্বে মুক্তি চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।