সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ, রাফির ৫ উইকেট

সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দাপুটে জয়ে আবারও সিরিজে সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। গতকাল রাজশাহীতে চতুর্থ যুব ওয়ানডে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৪ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সফরকারীদের ১২৮ রানে বেঁধে ফেলে ২৯ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। সিরিজে টিকে থাকতে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক রাফিউজ্জামান রাফি। ৭.২ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৮ রানে পাঁচ উইকেট নেন ১৬ বছর বয়সী এ বাঁহাতি স্পিনার। যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর রাফির হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন ২-২ সমতা। প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয়টি জিতে সমতায় ফিরেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচ জিতে ফের এগিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। চতুর্থ ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ে আবারো সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ।

বাকি একই মাঠে আগামীকাল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে লড়বে দু’দল।
অসুস্থতার কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারেননি নিয়মিত অধিনায়ক আহরার আমিন। শেষ ম্যাচেও তিনি থাকবেন না। তার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অলরাউন্ডার মাহফুজুর রহমান। বল হাতে উইকেট না পেলেও ব্যাটিংয়ে ২৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসে দলের জয়ে অবদান রাখেন মাহফুজ।

রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রিজান হোসেনের তোপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজের প্রথম ওভারে দারুণ ইন-সুইঙ্গারে আগের ম্যাচে ফিফটি করা থিবি গ্যাজাইডেকে বোল্ড করেন অভিষিক্ত পেস অলরাউন্ডার। পরের বলে এলবিডব্লিউ হন ডেভিড টিজার। পাওয়ার প্লেতে জোনাথন ওয়ারেন ফন জাইলকেও আউট করেন রিজান।
এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন গিলবার্ট প্রিটোরিয়াস। রিচার্ড সেলেৎসোয়ানের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তিনি গড়েন ৪০ রানের জুটি। রাফির বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৩ রান করা প্রিটোরিয়াস। এরপর ১৮ রান করা সেলেৎসোয়ানকেও ফেরান রাফি। লিয়াম অ্যাল্ডার ও অলিভার জেমস হোয়াইটহেডের চেষ্টায় একশ পেরোয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়াসি সিদ্দিকের লেগ স্পিনে কাটা পড়েন হোয়াইটহেড। রাফির শিকার অ্যাল্ডার। নিজের অষ্টম ওভার করতে এসে পরপর দুই বলে কোয়েনা মাফাকা ও ত্রিস্তান লুসকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন রাফি। ১৩ ম্যাচের যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে রাফি প্রথমবার ৫ উইকেট পেলেন। এছাড়া রিজান ৩টি ও ওয়াসি দুই উইকেট নেন।

রান তাড়ায় শুরুতেই ফেরেন চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান। আরেক ওপেনার আদিল বিন সিদ্দিক খেলতে থাকেন মারমুখী ভঙ্গিতে। তবে বেশি দূর যেতে পারেননি তিনিও। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২৫ রান করেন তিনি। চার নম্বরে নামা আরিফুল ইসলামও অল্পতে আউট হওয়ার পর নাঈম আহমেদকে নিয়ে এগোতে থাকেন রিজান। দুজনের জুটিতে আসে ৩১ রান। কিন্তু হুট করেই ১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২১ রান করেন নাঈম। রিজান খেলেন ৫০ বলে ২২ রানের ইনিংস। শিহাব জেমসকে রানের খাতা খুলতে দেননি অ্যাল্ডার। ৭৮ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন মাহফুজুর ও আশরাফুল। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে রয়েসয়ে খেলে বাকি কাজ সারেন দুজন। অ্যাল্ডারের বলে ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন মাহফুজুর। সমান ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন অভিষিক্ত কিপার-ব্যাটসম্যান আশরাফুলও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৩৫.২ ওভারে ১২৮ (প্রিটোরিয়াস ৪৩; বর্ষণ ৪-০-২১-০, রিজান ৬-০-২৪-৩, আরিফুল ৭-০-২১-০, রাফি ৭.২-১-১৮-৫, ওয়াসি ৬-১-২৩-২, মাহফুজুর ৫-১-১৬-০)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ২৯ ওভারে ১৩১/৬ (আদিল ২৫, রিজওয়ান ৫, রিজান ২২, আরিফুল ৩, নাঈম ২১, শিহাব ০, আশরাফুর ২৫*, মাহফুজুর ২৫*; অ্যাল্ডার ১০-১-৪৫-৩)
ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রাফিউজ্জামান রাফি
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-২ এ সমতা