যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার মধ্যে পরমাণু চুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি যুগান্তকারী পরমাণু অস্ত্র চুক্তি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এই চুক্তির আওতায় উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক হামলা করলে দক্ষিণ কোরিয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজনে নিজেদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন পারমাণবিক বোমাবাহী সাবমেরিন মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর বিনিময়ে দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা নিজেরা পরমাণু বোমা তৈরির চেষ্টা করবে না।

বিবিসির খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগে থেকেই এ ধরণের চুক্তি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। যে কোনো অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রয়োজনে পরমাণু বোমাও ব্যবহার করবে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এ নিয়ে সম্প্রতি সন্দেহ জন্ম নিয়েছে। এদিকে উত্তর কোরিয়ার একের পর এক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম শুরু করতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু সেটি করতে গেলে মিত্র দেশগুলোও শত্রুতে পরিণত হতে পারে।

তাই যুক্তরাষ্ট্রের থেকে পুনরায় প্রতিশ্রুতি আদায় করতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হল।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে এই চুক্তি করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইউল। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তির কথা জানান। এদিকে ৭০ বছরে পা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের। সে উপলক্ষ্যেই হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানান বাইডেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যবহৃত হবে এই চুক্তি। পারমাণবিক অস্ত্রসহ যেকোনো আক্রমণ প্রতিরোধে মিত্র দেশকে রক্ষায় নিজেদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া রেকর্ডসংখ্যক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। তারা প্রতিবেশী দেশে যেকোনো সময় পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে, এই আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে এমন ঘোষণা দিলো দক্ষিণ কোরিয়া।

এই চুক্তির আগে কয়েক মাস ধরে দুই দেশের কর্মকর্তারা চুক্তিটি প্রস্তুত করেছেন। হয়েছে দীর্ঘ দর কষাকষিও। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতিকে আরও বেশি প্রদর্শন করবে। এ জন্য তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন পাঠাবে। গত ৪০ বছরে এমনটা দেখা যায়নি। এছাড়া আরও বেশ কিছু কৌশলগত অস্ত্র পাঠানোর বিষয়েও একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।