ইরানের বালিকা বিদ্যালয়ে গ্যাস হামলা, ১০০ জনেরও বেশি অসুস্থ

নারী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে স্কুলে গ্যাস হামলার জেরে বেশ কয়েকজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। নভেম্বর থেকে প্রায় ৩০টি স্কুলের শত শত মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, কিছু হাসপাতালের বিছানায় এখনো শুয়ে আছে। কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনাগুলিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কিন্তু ক্রমেই এই ধরণের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ছে। অভিভাবকরা জানাচ্ছেন , শিশুরা মাথাব্যথা,অস্থিরতার সাথে ক্লান্তিভাব অনুভব করছে । কোনো কোনো ছাত্রী গন্ধযুক্ত ট্যানজারিন, ক্লোরিনের গন্ধ পেয়েছে । বালিকা বিদ্যালয়ে নতুন করে সন্দেহভাজন গ্যাস হামলার পরে ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মিডিয়া জানিয়েছে- অন্তত ১০টি বালিকা বিদ্যালয়কে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যার মধ্যে সাতটি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আরদাবিলে এবং তিনটি রাজধানী তেহরানে।

তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে-১০৮ জন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে , যাদের সকলের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। অভিভাবকদের সাথে কথা বলার পর ফারস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রাজধানীর পশ্চিমাঞ্চলীয় তেহরানসারের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি বিষাক্ত স্প্রেতে আক্রান্ত হয়েছিল। ফারস বলেছে যে নিরাপত্তা বাহিনী মেয়েদের স্কুলে বিষাক্ত হামলার জেরে সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে।

দেশের একজন আইনপ্রণেতা বলেছেন- নভেম্বরে রহস্যময় বিষক্রিয়ার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে, প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীকে শ্বাসকষ্টের জন্য হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়েছে। প্রতিবেশী আফগানিস্তানের মতো ইরানে মেয়েদের শিক্ষাকে লক্ষ্য করে ধর্মীয় চরমপন্থীদের আক্রমণের কোনো ইতিহাস নেই।
ইরানের পশ্চিমা-সমর্থিত রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরও নারী ও মেয়েরা স্কুলে যাওয়া অব্যাহত রেখেছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত স্বাস্থ্য ও গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ঘটনার তদন্ত করা এবং অবিলম্বে তদন্তের ফলাফল জনগণের কাছে প্রকাশ করা। যদিও মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগের রাতে, একজন সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিষয়টিকে ছোট করে দেখেছিলেন, এটিকে দেশের নামহীন শত্রুদের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ইরানের কঠোর ইসলামিক পোশাক কোড লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেপ্টেম্বর মাসে একজন তরুণী মারা যাওয়ার পর থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে । তার মধ্যেই এই বিষক্রিয়ার ঘটনা নতুন করে আগুনে ঘি ঢাললো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।