ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেন বাইডেন

ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবার তাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে বাইডেন এক শব্দে ‘না’ বলে দেন। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমাদের থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান চাইতে শুরু করেছে ইউক্রেন। এর আগে জার্মানিও সোজাসুজি যুদ্ধবিমান দেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

গত সপ্তাহেই ইউক্রেনকে ট্যাংক দেয়ার ঘোষণা দেয় পশ্চিমা মিত্ররা। ট্যাংক নিশ্চিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেন যুদ্ধবিমান চাইতে শুরু করেছে। দেশটির নেতারা বলছেন, শুধু ট্যাংক দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পাল্টে দেয়া যাবে না। এ জন্য প্রয়োজন অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। ইউক্রেনের যে যুদ্ধবিমান ছিল তার বড় অংশই রাশিয়া ধ্বংস করে দিয়েছে।

ফলে ইউক্রেনের আকাশের নিয়ন্ত্রণ এখন মস্কোর কাছে। এই অবস্থা পরিবর্তনে এফ-১৬সহ পশ্চিমা আধুনিক যুদ্ধবিমান চায় কিয়েভ।
বর্তমানে বেলজিয়াম ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর বিমান বাহিনীর প্রধান ভরসা এফ-১৬। এই বিমান পেলে আকাশে ইউক্রেনের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। দেশটি সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর গত তিন দশকেও আধুনিক কোনো যুদ্ধবিমান সার্ভিসে আনতে পারেনি। অপরদিকে রাশিয়া পশ্চিমাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যুদ্ধবিমানের উন্নতি করে চলেছে। সম্প্রতি তারা পঞ্চম প্রজন্মের সু-৫৭ যুদ্ধবিমান ব্যবহার শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে এখন যুদ্ধবিমান চায় ইউক্রেন।

কিন্তু বাইডেন বারবার ইউক্রেনের এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে চলেছেন। এর পরিবর্তে তিনি ভূমিতে যুদ্ধ করায় সহায়তা করবে এমন সমরাস্ত্র পাঠাচ্ছেন ইউক্রেনে। গত সপ্তাহেই দেশটি জানিয়েছে ইউক্রেনকে ৩১টি আব্রামস ট্যাংক দেবে তারা। জার্মানি ও বৃটেনও একইসময়ে লিওপার্ড ও চ্যালেঞ্জার ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। তবে ইউক্রেন ওই ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশের পূর্বেই নতুন দাবি নিয়ে হাজির হয়। ইউক্রেনের ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি মেলনিক বলেন, তার দেশ এখন ইউরোফাইটার, টর্নেডো, রাফালে এবং গ্রিপেন যুদ্ধবিমান চায়।

রোববার এক সাক্ষাৎকারে জার্মানির চ্যান্সেলর এলাফ শলতজ বলেন, আমরা যখন লিওপার্ড ২ ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছি, তখনই নতুন করে আবার সামরিক সহায়তা চাওয়া রীতিমতো বিরক্তিকর। ন্যাটো কোনোভাবেই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে নেই। তারা এখন যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে আর কোনো উস্কানি সৃষ্টি করতে চায় না।

যদিও মস্কো ন্যাটোর বিরুদ্ধে এরইমধ্যে প্রক্সি যুদ্ধের অভিযোগ এনেছে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনও সোমবার যুদ্ধবিমান প্রসঙ্গে নেতিবাচক অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফ্রান্স ইউক্রেনকে সাহায্য করতে গিয়ে নিজের প্রতিরক্ষাকে হুমকিতে ফেলতে চায় না। তবে নেদারল্যান্ডসসহ অন্যান্য ইইউ দেশগুলি এখনও যুদ্ধবিমান প্রসঙ্গে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। শুধুমাত্র পোল্যান্ড ইঙ্গিত দিয়েছে যে, অন্য ন্যাটো দেশগুলো যুদ্ধবিমান পাঠালে তারাও তাদের যুদ্ধবিমান পাঠাতে ইচ্ছুক।