৩রা ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক ইসলামী আন্দোলনের

শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতির প্রতিবাদে ৩রা ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ রোববার পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমাদের পাঠ্যবইয়ে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাক্ষণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মতো নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।
তিনি বলেন, আমাদের পাঠ্যবইয়ের সার্বিক পর্যালোচনায় এমন বহু বিষয় আছে যা এদেশের মানুষের সামাজিক পুজির সাথে সাংঘর্ষিক। বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞান অসমর্থিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই অঞ্চলের ইতিহাসের একটি ভুল ও মিথ্যা বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যার ভিত্তি আমাদের কাছে মনে হয়েছে, ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে ব্রাক্ষ্মন্যবাদী, হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক এজেন্ডা। কারণ এই অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলমানদের উপনিবেশিক ও আগ্রাসী শক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত।

তিনি আরো বলেন, পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার এর ইস্যু আরেকটি ভয়াবহ দিক। এটা আমাদের পরিবার, সমাজ, মানব প্রজননসহ গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ফেলবে। এই বই সংশোধন না করে বরং বাতিল করতে হবে।

সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও উলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সাথে এই বই রচনার সাথে জড়িতদের ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
রেজাউল করিম পাঠ্যবইয়ে সুলতানি আমলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃতি, হিন্দুধর্মের ধর্মীয় গ্রন্থ বেদকে এক ঐতিহাসিক দলিল হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া, সুলতানি আমলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃতি, বাংলার ইসলামী পরিচয়কে আড়াল করা, প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও দেশীয় সংষ্কৃতি বিরোধী ট্রান্সজেন্ডার প্রমোট, শিশু মনে আত্ম-পরিচয় সংকট সৃষ্টি করা, স্বাস্থ্য সুরক্ষার নামে হাজার বছরের প্রথা ও রীতির বিরুদ্ধতা, ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করা, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক বিবর্তনবাদকে চাপিয়ে দেয়া, ধর্মীয় স্বাতন্ত্রতাকে বিলীন করে দেয়ার অপচেষ্টা, প্রচ্ছদ এবং বইয়ের পাতায় পাতায় ভিনদেশী সংস্কৃতি উপস্থাপন, প্লেজারিজম বা চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নেয়া, তথ্য ও বানানগত ভুল এবং ভাষাগত আগ্রাসনের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
এসময় তিনি সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলেন, সুইডেন ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।