শত শত বছর ধরে শাড়িতে মিশে রয়েছে বাঙালিয়ানার ছাপ। উৎসবে, ঘরে-বাইরে নারী যেন শাড়িতেই অতুলনীয়। সেই খাতিরে দেশীয় সংস্কৃতি, নারীর শাড়ি চাহিদা এবং উৎসবের কথা মাথায় রেখে এবার ঈদের শাড়ি বাজারে দেখা যায় রকমারি ডিজাইন।
ঈদের শাড়িতে সঙ্গে থাকা চাই আভিজাত্য ও নতুনত্বের ছোঁয়া। এখন পাথর, চুমকি, লেস বসানো জাঁকজমক শাড়ির চলটা কম। মসলিন, বেনারসি, ঢাকাই জামদানি এবং কাতান শাড়িই থাকছে ক্রেতাদের প্রথম পছন্দে। ঈদ সামনে রেখে ঐতিহ্যবাহী এই শাড়িগুলোর উপকরণ, রং এবং নকশায় যোগ হয়েছে বৈচিত্র্য।
এ বছর ঈদে বর্ষা ও খানিকটা গরম থাকায় সুতি, খাদি, অ্যান্ডি, সিল্ক, হাফ সিল্কশাড়ির প্রতিই থাকছে সকলের নজর। প্রকৃতির সাথে মিল রেখে শাড়িতে হালকা ও উজ্জ্বল রঙেরব্যবহার থাকবে প্রচুর। এবার নীল, বেগুনি, ম্যাজেন্টা, ফিরোজা, পেস্ট, সাদা, গোলাপী, সবুজ-শাড়িতে এধরনের রঙ প্রাধান্য পাবে বেশি। এবার শাড়িতে চওড়া পাড়ের আধিক্য বেশি দেখা যাচ্ছে। সুতি, জর্জেট ও সিল্ক শাড়ির ওপর পাড় এবং তাতে সুতার কাজ বা হ্যান্ড প্রিন্ট চলছে এবার।
শাড়ি হওয়া চাই আরামেরও। এজন্য ঈদে দেখতে পারেন সুতি ও মসলিনের মধ্যে। এক প্যাঁচ স্টাইলে পরার জন্য সুতি শাড়ির তুলনা নেই। তবে তা ঘরেই বেশি মানানসই। তাই ঈদের দিনে ঘরের মজা সেরে ফেলতে পারেন এমন একটি গায়ে জড়িয়ে। শাড়ির আঁচলে রয়েছে ভেদাভেদ। ছোট আঁচলের শাড়ি বেশ স্টাইলিশ লুক আনে।
ডিজাইনগুলোতে যেমন পাওয়া যায় ঐতিহ্য কমতি নেই বৈচিত্র্যতার। মসলিনে দেখা যায় দপকা, বির্টস, জরি, পালস দিয়ে বিভিন্ন নকশার করা হাতের কাজ। মসলিনেও দেখা যায় এমন রকমারিতা। এসব শাড়িতে জরির কাজে, ভেজিটেবল ডাইয়ের ব্যবহার দেখা যায়। এ ছাড়াও স্মোক শিফনের শাড়ি, ধুপিয়ান কাতান, অপেরা জুট কাতান, গাদোয়ান কাতান, গাদ্দি কাতানের মতো শাড়িতেও পাওয়া যাবে ঈদের ডিজাইনের রমরমা।
টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরে তসরের ওপরে জামদানি কাজের শাড়ি পাওয়া যাবে লোকাল শাড়ির মার্কেটসহ কয়েকটি ফ্যাশন হাউসেও। তবে রাজশাহী সিল্ক, কটন, এণ্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন, তাঁত কটনসহ বিভিন্ন কাপড়ে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, কাঁথা স্টিচ ছাড়াও দেখা মিলবে বিভিন্ন ম্যাটারিয়ালের কাজের।
ঈদে আবহাওয়া, বর্তমান ফ্যাশন এবং ক্রেতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যে নগরীর বিভিন্নবুটিক হাউজের সকল প্রস্তুতি শেষ। সাধারণ বড় বড় শপিং মলগুলো থেকে একটু ভিন্ন ধরনের পোশাকযারা পছন্দ করেন, তারাই সাধারণত ভিড় করেন বুটিক হাউজগুলোতে।

এছাড়া বুটিক হাউজের পাশাপাশি নগরীর মিমি সুপার, সানমার, আফমি প্লাজা, নিউ মার্কেটের মত অভিজাত শপিংমল গুলোতে দেশী শাড়ির চাহিদার সাথে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় শাড়ির চাহিদাও। ফলে এখানেও ক্রেতাদের রয়েছে ব্যাপক ভিড়। ফ্যাশন যাই হোক না কেন, স্টাইল নির্ভর করে নিজের ব্যক্তিত্বের ওপর।
তাই সেই ব্যক্তিত্বকে মানায় এমন শাড়িই কেনার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন ডিজাইনাররা।











