রাউজানে গৃহবধূ রোকসানা আক্তার হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও দুইজন গ্রেপ্তার

শফিউল আলম, রাউজান প্রতিনিধিঃ রাউজানের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ রোকসানা আকতার হত্যার ঘটনায় জড়িত ননদের স্বামী মো. হোসেল ও তার বন্ধু জহিরকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তার দুইজনকে চট্টগ্রাম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে গত রবিবার আত্মগোপনে থাকা হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের ননদের স্বামী মো. সোহেলকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীর হাট এলাকা গ্রেপ্তার করা হয়। তার বন্ধু জহিরকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকার শশুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭এর একটি দল। গ্রেপ্তার সোহেল রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের প্রয়াত লাল মিয়ার ছেলে। তার বন্ধু জহির বাগোয়ান ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের ছগির আহেদের ছেলে। মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তার মামাশ্বশুর মো. ইউসুফ। জমি বিক্রির টাকা চাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুমের পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। নিহতের স্বামী মো. আজম ও তার মা রিজিয়া বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন মো. ইউসুফ। তিনি উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত মহসিনের ছেলে। তিনি হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর সকালে রোকসানাকে হত্যা করা হয়। পরদিন থানায় নিখোঁজের জিডি করা হয়। এটি করতে তদবির করেন ইউসুফ। লাশ উদ্ধার করা হয় ১ ডিসেম্বর রাতে। হত্যাকান্ডের সময় রিজিয়া বেগম উপস্থিত না থাকলেও তিনি ঘরে এলে তার ছোট্ট নাতি তাকে সব ঘটনা জানিয়েছিল। পরে তিনি নিজের ভাইকে বাঁচাতে লাশ গুমে সহায়তা করেন। অন্যদিকে স্বামীকে বাঁচাতে ঘটনা প্রকাশ করেনি রোকসানার ননদ। পুলিশসূত্র আরও জানায়, রোকসানার স্বামী মো. আজম সহজ-সরল। পরিবারের দেখাশোনা করতেন তার মামা। এক বছর আগে ১৮ লাখ টাকায় আজমের বাবার জমি বিক্রি করে সে টাকা নিজের কাছে রাখেন ইউসুফ। সে টাকায় তিনি ব্যবসা করে প্রতিমাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা করে দিতেন আজমের পরিবারকে। এর প্রতিবাদ করায় আজমের স্ত্রী রোকসানাকে হত্যার ছক আঁকেন তিনি। পরে নিহতের ননদ ফেরদৌসের স্বামী সোহেল, সোহেলের বন্ধু জহির মিলে হত্যা করেন। গলটিপে ধরেন সোহেল, কাঠের বাটাম দিয়ে মাথায় জোরে আঘাত করেন ইউসুফ। পরে তারা লাশ নালায় ফেলে দেন। ঘটনার কথা জানতেন মো. আজম; কিন্তু তাকে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়েছিল পরিকল্পনাকারী। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান বলেন, গৃহবধূ রোকসানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মাস্টারমাইন্ড মামা নিহতের শশুর হাইকোর্ট থেকে জামিম নিয়েছেন। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, হত্যাকান্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় হাস্তান্তর করেছিল র‌্যাব। তারা আদালতে১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তারা দুইজন।