দুই হাজার জন ছানী রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করল চন্দনাইশ সমিতি

অসহায়দের চিকিৎসায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্ঠা
প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরে দুই হাজার ছানী রোগীর সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন করেছে চন্দনাইশ সমিতি-চট্টগ্রাম। এছাড়া ত্রিশ হাজার চক্ষু রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষধও বিতরণ করা হয়েছে। আত্মসামাজিক নানা কাজের মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়ন ও দরিদ্র নিরসনে কাজ করেছে এই সমিতি। এজন্য সমিতির সদস্যের অনুদান থেকে ব্যয় করা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। বাইরের কোনো ধরনের পৃষ্টপোষকতা ছাড়া শুধু মাত্র সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে অনুদানে এমন মহৎ কাজ সম্পন্ন করে চলেছে চন্দনাইশ সমিতি। ভবিষ্যতে চন্দনাইশে স্বতন্ত্র জব ফেয়ার করার পরিকল্পনাও আছে উদ্যোক্তাদের।
শুক্রবার নগরীর সেভরন আই হসপিটাল এন্ড রিসার্চ সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চন্দনাইশ সমিতির সাধারণ সম্পাদক  মো. মাকসুদুর রহমান। সমিতির সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্ঠা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক আজম খান, সদস্য আবু ফয়েজ, জামসেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ইয়াকুব নবী, সমিতির সহসভাপতি এডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মো. ইদ্রিস, আ ন ম হাসান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্না, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাদ, দপ্তর সম্পাদক নেজাম উদ্দীন, সম্পাদক এডভোকেট শওকতুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদক  পূরবী দাশ, সদস্য সাইফুদ্দিন, আবদুল্লাহ আল ফারুক চৌধুরী, মালকুতুর রহমান মুনির, সহ অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ  নূরউদ্দীন রোমেল, ধর্ম সম্পাদক আবু তাহের,  সদস্য শওকতুল ইসলাম, সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান বলেন, ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ সময় অতিক্রম করেছে চন্দনাইশ সমিতি। চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত চন্দনাইশবাসীকে একই প্ল্যাটফরমে এনে পারস্পরিক যোগাযোগ, সৌহাদ্য ও সম্প্রীতি গড়ে তোলা এবং সবার সহযোগিতার মাধ্যমে চন্দনাইশের গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ব্রত। এর অংশ হিসাবে আমরা এ পর্যন্ত দুই হাজার ছানী রোগীর বিনামূল্যে অপারেশন সম্পন্ন করেছি। ত্রিশ হাজার চক্ষু রোগীর বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ৗষধ বিতরণ করছি। স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা, সহ¯্রাধিক ছেলের খতনা ও মেয়ের কর্ণ ছেদন, আট শতাধিক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা জীবন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক বৃত্তি প্রদান, জুনিয়র লেভেলে শিক্ষার্থীদের নগদ সহায়তা প্রদান, নিয়মিত মিলনমেলর আয়োজন, গুনীজনদের সম্মাননা প্রদান, গাছের চারা বিতরণ, ত্রাণ বিতরণ, চাকুরী প্রাপ্তিতে সহযোগিতার  মতো কাজ নিয়মিত করে যাচ্ছি।
বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, চন্দনাইশের আতœসামাজিক উন্নয়নে চন্দনাইশ সমিতি সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের উর্ধে আমরা অসহায় মানুষের জন্য কাজ করেছি। চন্দনাইশ সমিতির প্রতিটি সদস্য মানুষের সেবায় নিবেদিত প্রাণ। করোনা মহামারির সময়েও আমরা চিকিৎসা সেবা, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, অক্সিজেন সেবার মতো সেবা দিয়ে চন্দনাইশবাসীর পাশে ছিলাম। মানবিক এসব কাজের পাশাপাশি ভবিষ্যতে চন্দনাইশে একটি মেডিকেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং চন্দনাইশের বেকার যুবকদের চাকরির ব্যবস্থার জন্য জব ফেয়ারের আয়োজন ইচ্ছে আছে আমাদের।
সমিতির প্রধান উপদেষ্ঠা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে চোখের ছানী পড়া একটি কমন রোগে পরিণত হয়েছে। বয়স্কদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। ছানীর কারণে চোখে দেখতে পায় না, অপরের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারে না। একেকটি ছানী অপারেশনে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে যায়। চন্দনাইশ সমিতির মাধ্যমে বিনামূল্যে আমরা দুই হাজার ছানী রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করেছি। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। আমরা এ কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।

ছবির ক্যাপশন : দুই হাজার ছানী রোগীর অপারেশন সম্পন্ন উপলক্ষে চন্দনাইশ সমিতির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান।