লাখ ডলারের মার্সিডিজ আমদানির এলসি মাত্র ২০ হাজার ডলার

কয়েক মাসের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের তথ্য তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বেশি দামের পণ্য কম দামে এলসি করে বাকি অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যেমন- এক লাখ ডলারের মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানির জন্য মাত্র ২০ হাজার ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। বাকি অর্থ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে হুন্ডিতে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন গভর্নর।

আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে অর্থপাচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের আমদানি করা পণ্যের ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ইনভয়েস (আমদানি মূল্য বাড়িয়ে দেখানো) হয়েছে।

গত জুলাই মাসে এমন আশ্চর্যজনক প্রায় ১০০টি এলসি বন্ধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পণ্যের দাম এমন কম বা বেশি দেখানোর বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ট্রেড বেইজ্ড মানিলন্ডারিং বন্ধ করা সম্ভব হবে।

‘আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, সঠিক মূল্যে এলসি খুললে সবাই আমদানি করতে পারবেন। কোনোভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। শুধু ৩০ থেকে ৩৫টি বিলাসি পণ্য, যেগুলো আমদানি না করলেই হয়, সেগুলোর ওপর শুল্ক কর বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি এলসি মার্জিন বাড়ানো হয়েছে।

ডলারের দামের বিষয়ে গভর্নর বলেন, দেশীয় মুদ্রার বিনিময় হার বাজারনির্ভর হওয়া উচিত। এজন্য এখন ডলারের দাম বাজারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে ১২১ টাকার ডলার ১১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আমদানি পর্যায়ে ডলারের দাম এখন ১০৩ থেকে ১০৪ টাকা। এটি কয়েক মাস আগেও অনেক বেশি ছিল।

ডলারের বাজার এখন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিআইডিএসের তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিনায়ক সেন। এছাড়া বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।