নিম্ন-মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে নিত্যপণ্য

শীতের আগমনী বার্তা আসছে। সেই সঙ্গে ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের সবজি।

কিন্তু দাম আকাশচুম্বী। শতকের ঘর পেরিয়ে বাজারে অবস্থান নিয়েছে সিম, কাঁচা মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও গাজর। খুচরা বাজারে মরিচ বেশ কয়েক সপ্তাহ থেকে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে।
আগাম জাতের সিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজিদরে, ফুল কপি, বাঁধা কপি ১০০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা। এছাড়াও নিত্যপণ্যের বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সয়াবিন, পামওয়েল তেল ও চিনির দাম। খুচরা বাজারে যেকোনো চিনি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৮০ টাকা কেজিতে। খোলা সয়াবিন ১৫০ টাকা লিটার। এমন অবস্থায় মাসের বাজারের বরাদ্দ বাড়াতে হচ্ছে ক্রেতাদের, নয়তো বাজারের ব্যাগ ছোট করে ফেলতে হচ্ছে।

ফরিদপুর শহরের স্টেশন বাজারে কাঁচা বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী লিমন খান।

 

তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা থাকলেও তা দেখার কেউ নেই। এ মৌসুমে স্বভাবতই সবজির দাম কিছুটা বেশি, আলু ছাড়া অন্যসব পণ্যের দামই তুলনামূলক বেশি। বাজারে ৪০-৫০ টাকার নিচে এক কেজি সবজি পাওয়া দুরূহ। বেতন তো বাড়ছে না বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ফলে বাধ্য হয়েই ছোট করতে হচ্ছে বাজারের তালিকা।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী ছুরাপ মোল্লার দাবি, বছর বছর নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ে কিন্তু পরে তা আর কমে না। সবজির দাম নিয়ে ক্ষোভ তো রয়েছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে চাল, তেল, ডিম ও চিনির বাড়তি দাম। এ অবস্থায় স্বল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন বলে জানান তিনি।

তুরাপ আলী নামে এক দিনমজুর বলেন, বাজার থেকে কিছু কেনার উপায় নাই। সব কিছুর দামই অনেক বেশি। আমাগো নাগালের বাইরে। আপনেই কন, আমরা কি খেয়ে বাঁচুম?’

বিক্রেতারা বলছেন, শীতের সবজি স্থানীয়ভাবে এখনও উৎপাদন শুরু না হওয়ায় তা আনতে হচ্ছে যশোর, কুষ্টিয়া থেকে। ফলে দাম বেশি। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এ সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

 

স্থানীয়ভাবে এখন শুধু লালশাক, পালং শাক, পুঁইশাক, পটল, লাউ, কাকরোল, বেগুন ও কিছু করলা উৎপাদিত হচ্ছে। শীতের সবজি পুরোপুরি বাজারে আসতে এখনও ২০ থেকে ২৫ দিন বাকি।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি শেখ ফয়েজ আহমেদ বলেন, বাজার তদারকির জন্য জেলায় একাধিক সংস্থা থাকলেও তাদের কার্যক্রম তেমন চোখে পড়ে না। তাদের সম্মিলিত কঠোর বাজার তদারকি করা হলে সেক্ষেত্রে বাজারের পণ্যের দাম অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায় বলেন, পণ্যের চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় এসময়টায় দ্রব্যের দাম কিছুটা বাড়তি থাকে। তবে জেলা প্রশাসন পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে তিন-চারদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভোক্তা অধিকার, মার্কেটিং অফিসারও তদারকি শুরু করেছে।>>বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম