ঢাকায় ৯৩ কিমি বেগে ‘কালবৈশাখী’, নিহত ৪

ইফতারির পর হঠাৎ ৯৩ কিলোমিটার বেগে রাজধানীর ওপর দিয়ে বয়ে গেলো কালবৈশাখী ঝড়। এতে প্যান্ডেল ভেঙে এরইমধ্যে বায়তুল মোকাররম মসজিদে মারা গেছেন এক মুসল্লি। বাড্ডায় দেয়াল ধসে মারা গেছেন অন্তত তিনজন। ভেঙে পড়েছে গাছের ডাল। জৈষ্ঠ্য মাসে এমন আরও কালবৈশাখী মাঝে মধ্যে হানা দেবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, ঢাকায় মৌসুমের বড় ধরনের কালবৈশাখী হয়ে গেলো শুক্রবার (১৭ মে) সন্ধ্যায়। বিমানবন্দর এলাকায় এ ঝড়ের সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ উঠেছিল ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার। আগারগাঁওয়ে ৬৫ কিলোমিটার বেগে এ ঝড় বয়ে যায়। দেশের অন্যান্য স্থানেও এ ঝড় বয়ে গেছে। রংপুরে এ ঝড়ের গতি ছিল ৬৭, বগুড়ায় ৬৫ ও রাজশাহীতে ৫২ কিলোমিটার।হঠাৎ এ ঝড় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বেশ তাণ্ডব চালিয়ে গেছে প্রকৃতিতে। ভেঙে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা, গাছপালা। উড়িয়ে নিয়ে গেছে চাল। ইফতারির পরপরই হওয়ায় ঘরে ফেরা অনেক মানুষও বেশ বিপাকে পড়ে এ ঝড়ে। সঙ্গে দমকা বৃষ্টি থাকায় ভোগান্তি আরও বাড়ে।দমকা বাতাস ও ঝড়ো বৃষ্টির কবলে পড়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের পশ্চিমপাশে মুসল্লিদের নামাজের অস্থায়ী প্যান্ডেল ভেঙে পড়ে সফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত অন্তত ১৩ জন।এছাড়া মধ্যবাড্ডায় প্রাণ সেন্টারের পাশে একটি দেয়াল ধসে তিনজন আহত হন। এর মধ্যে ২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ও একজনকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে তিনজনই মারা গেছেন।ক’দিনের তীব্র গরমের পর এ ঝড়-বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয় রাজধানীবাসীর। ব্যাপক সতর্কতা থাকার পরও ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময়ে বাতাসের গতিবেগ এতো ওঠেনি রাজধানীতে।আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৈশাখটা যেমন খরতাপে কেটেছে, জৈষ্ঠ্যটাও একইভাবে কাটবে। মাঝে একটু আধটু বৃষ্টিপাত কিছুটা আরাম দিলেও দিনের বেলায় সূর্য তার তেজ নিয়েই হাজির হবে। ফলে তাপমাত্রার তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না।রাজধানীর এ বৃষ্টিপাত বেশিক্ষণ চলবে না। কিছুটা তাপ কমবে। আবার বাড়বে। এভাবেই চলবে। খুলনা ও ঢাকার কিছু কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে। এটা অব্যাহত থাকবে।আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে আরও জানিয়েছে, সাগরে লঘুচাপ আছে। সোমবার নাগাদ তাপমাত্রা আরও বাড়বে। তবে আগামী পাঁচদিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও কিছুটা বাড়বে। আর শনিবার সন্ধ্যায় ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলে এবং রংপুর, রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো অথবা দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া দেশের সর্বত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক ও আকাশ মেঘলা থাকবে। তবে কালবৈশাখী ও ভারী বর্ষণের কোনো সতর্কতা নেই।শুক্রবার (১৭ মে) দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে, ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজারহাটে, ৩৭ মিলিমিটার।