চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, আলী আজগর চৌধুরীর সারাজীবন ধ্যান, জ্ঞান ছিল ফতেয়াবাদ তথা সমাজের উন্নয়ন, বিত্ত-বৈভব, অর্থ উপার্জন তাকে কখনোই টানেনি। তাঁর সঙ্গে আমার ৪২ বছরের বন্ধুত্ব। তিনি কোনদিন নিজের জন্য কিংবা অন্যের জন্য আমার কাছে অন্যায় আবদার করেননি।
আজ শনিবার বিকালে ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে ফতেয়াবাদ নাগরিক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সমাজসেবক আলী আজগর চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংসদ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আজকাল রাজনীতি বদলে গেছে। সমাজ ব্যবস্থা বদলে গেছে। এই বদলানোর ধারায় ছিলেন না আলী আজগর চৌধুরী। তাকে যখন যে দায়িত্ব দিয়েছি তিনি সফলভাবেই অর্পিত দায়িত্ব শেষ করেছেন। নিজের জন্য কিছু না চাইলেও এলাকায় রাস্তাঘাট, সমাজে অবহেলিত মানুষের জন্যই আমার কাছে তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চাইতেন। যখন যে প্রকল্প দিয়েছি তা বাস্তবায়ন করেছেন। কেউ তার বিরুদ্ধে আমার কাছে অভিযোগ করেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলী আজগর চৌধুরী পার্থিব জগতে বিত্ত-বৈভবের মালিক না হলেও তার সন্তানদের মানুষ করেছেন। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তার বড় ছেলে আলী আরশাদ চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। সম্প্রতি তিনি পিএইচডি করেছেন। আরেক সন্তানকে আইনজীবী বানিয়েছেন। বাকি দুই সন্তান ব্যবসা করেন। একজন পিতা হিসেবে আলী আজগর চৌধুরী সফল। শুধু সন্তানদের দিকেই যে তার দৃষ্টি ছিল এমনটি নয়, সারাজীবন তার ধ্যান, জ্ঞান ছিল ফতেয়াবাদ তথা সমাজের উন্নয়ন।’
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আরও বলেন, ‘আলী আজগর চৌধুরীর সাথে আমার পরিচয় ১৯৭৯ সালে। তার সাথে আমার ছিল পরম বন্ধুত্ব। মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে আমার অন্যরকম সম্পর্ক ছিল। মৃত্যুর আগে একটি কাগজে কিছু কথা লিখে গেছেন তিনি। ওই কাগজে আমার সাথে তার সম্পর্ক যে কত গভীর ছিল তা তিনি উল্লেখ করে গেছেন। আমি যেভাবে তার জন্য অনুভব করি, তিনিও আমার জন্য সেভাবে অনুভব করতেন। মৃত্যুর আগে দুজনের সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে তিনি যে একটি কাগজে লিখে গেছেন সেটি আমি জানতাম না। আমি অকপটে বলছি, আমাদের দীর্ঘ ৪২ বছরের সম্পর্কের মধ্যে তিনি আমার কাছে কিছুই চাননি। কখনো মতের অমিল দেখা দিলেও ভিন্ন মতাদর্শের ব্যক্তিকে সম্মান দিয়ে কথা বলতেন আলী আজগর চৌধুরী। ব্যবহারে তিনি ছিলেন বিনম্র এবং অমায়িক। আমার রাজনৈতিক জীবনে তাকে যতবার ডেকেছি ততবার পাশে পেয়েছি।’
ফতেয়াবাদ নাগরিক কমিটির আয়োজনে সংগঠনের সহসভাপতি আলী নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. সজীব কুমার ঘোষ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবং সিডিএর সাবেক বোর্ড সদস্য ইউনুচ গণি চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগর চৌধুরী, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি বাস মালিক সমিতির সভাপতি এবং উত্তর জেলা আওয়ামী নেতা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুসহ বিশিষ্ট জনেরা, প্রয়াত আলী আজগর চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের অধ্যাপক আলী আরশাদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।।









