‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজটির পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী

আনোয়ারার পারকি সৈকতে আটকে থাকা ১৯২ মিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার জাহাজ ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ কাটতে সময় লাগবে প্রায় তিন মাস।

জাহাজের মালিক মেসার্স ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের একজন পরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, শনিবার (১১ ডিসেম্বর) থেকে জাহাজটি কাটার কাজ শুরু হয়েছে।

তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরা’র তাণ্ডবে বন্দরের বহির্নোঙর থেকে জাহাজটি সরে গিয়ে পারকি সমুদ্র সৈকতের চরে আটকা পড়ে। জাহাজের মালিক ছিল ক্রিস্টাল গ্রুপ। কিন্তু ব্যাংক ঋণ এবং নাবিকদের বেতন জটিলতায় জাহাজটি ১১ কোটি টাকায় নিলামে কিনে নেয় ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি সৈকতে অনুমতি ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ জাহাজটি কাটার অভিযোগে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজকে দুই কোটি টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদফতর। জাহাজ কাটার কারণে এক হাজার ৪৯১ শতাংশ সৈকতের জীববৈচিত্র্য নষ্ট এবং সামুদ্রিক জীব ধ্বংস হয় বলেও জানায় পরিবেশ অধিদফতর। জরিমানা পরিশোধ সাপেক্ষে ৩২টি শর্ত মেনে জাহাজ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ উচ্চ আদালতে আপিল করে। উচ্চ আদালত আবেদনটি খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুফিদুল আলম বলেন, ২ কোটি টাকা জরিমানা পরিশোধ করায় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিয়ে জাহাজটি কাটা হচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর এটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ‘ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজটির পাশে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সেটি কাটা হচ্ছে। শ্রমিকরা জানান, পর্যটকরা জাহাজ কাটা দেখতে আসছেন। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তাদের তাদের নিরাপত্তায় চারপাশে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, পরিবেশ অধিদফরের ছাড়পত্র নিয়ে জাহাজটি কাটা হচ্ছে। জাহাজের ৭০টি পয়েন্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মালয়েশিয়ার ল্যাবে পাঠানো হয়। এতে দেখা গেছে, ক্ষতিকর উপাদানগুলো নেই। তেল ও রং নিঃসরণ রোধে ড্রাম বসানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, জাহাজটির কারণে জোয়ারের সময় সাগরের স্রোত পরিবর্তন হয়ে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। জাহাজটির আশপাশে বালি জমে গেছে। দূর-দূরান্ত থেকে জাহাজটি দেখার জন্য পর্যটকরা পারকি সৈকতে ভিড় জমাতেন।