পুঁজিবাদী শোষণ ও দুর্বৃত্তায়িত বুর্জোয়া রাজনীতি রুখে দাঁড়ান

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল -বাসদ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও রুশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লববার্ষিকী উপলক্ষে বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ কমরেড আল কাদেরী জয়। বক্তব্য রাখেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা সদস্য কমরেড স ম ইউনুচ, মহিন উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন কবির, নুরুল হুদা নিপু।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে কোনো সচেতন মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে পারে না। এক দিকে আকাশ ছোঁয়া উন্নয়ন অন্যদিকে বৈষম্যের পাহাড়।মানুষের দুর্দশার শেষ নেই।পুঁজিবাদী শোষণ ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জর্জরিত বাংলাদেশের জনগণকে করোনা মহামারি এক দুর্বিসহ জীবনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। একদিকে জাজ হারিয়েছে কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ, দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে ৪২ শতাংশ মানুষ। নতুন করে দরিদ্র হয়েছে আড়াই কোটি মানুষ, সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন বির্পযস্ত,রাষ্ট্রীয় পাটকল ও চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে বেকার করে দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে দেশে চলছে লুটপাটের মহোৎসব। করোনা পরীক্ষা, চিকিৎসা, মাস্ক, স্যানিটাইজার, অক্সিজেন, আইসিইউসহ চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে জনগণকে জিম্মি করে সরকারি সহায়তায় লুটপাটকারীরা হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
বক্তারাবলেন, সব দেশে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে কিন্তু বাংলাদেশে তা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চাল – ডাল, আটা -ময়দা,তেল, চিনিসহ সকল পণ্যের উপর মুনাফালোভী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। সরকার বলছে মূল্যস্ফীতি ৫.৮ শতাংশ কিন্তু চালের দাম বেড়েছে ৩১ শতাংশ,রান্নার তেলপর দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ আর সকল পণ্যের দাম গড়ে ২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত চার মাসে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বেড়েছে কয়েক দফা। অন্যদিকে জিডিপি বাড়ছে, মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ২২৭ ডলার অথচ ৫০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। ছয় কোটি ৮২ লাখ শ্রমজীবীর জীবনে দুর্দশা চরমে অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে করোনাকালে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ১৭ হাজার ২৯২ জন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দারিদ্র্য,আর কোটিপতি বৃদ্ধি সমানতালেই বেড়ে চলেছে।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৮০ সালে ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল – বাসদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে শোষণমূলক ব্যবস্থা উচ্ছেদ করে সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লড়াই অব্যাহত রেখেছি। মানুষের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা শ্রমিকের ন্যায্য মজুরী, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম প্রাপ্তি, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের লুন্ঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আমাদের সংগ্রাম পরিচালনা করছি। বক্তার আগমাীতে এ লড়াই অব্যাহত রাখার আহবান জানান। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দোস্ত বিল্ডিং দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।